আজঃ শুক্রবার ২০-০৯-২০২৪ ইং || খ্রিষ্টাব্দ

নিখোঁজ সাবমেরিনের কেউই আর বেঁচে নেই, আশঙ্কা রিপোর্টে

Posted By Shuvo
  • আপডেটেড: শুক্রবার ২৩ জুন ২০২৩
  • / পঠিত : ৯৯ বার

নিখোঁজ সাবমেরিনের কেউই আর বেঁচে নেই, আশঙ্কা রিপোর্টে

ডেস্ক: আটলান্টিক মহাসাগরে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে গিয়ে নিখোঁজ ওশানগেট কোম্পানির টাইটান সাবমেরিনের পাঁচ আরোহীর কেউই আর বেঁচে নেই। সাবমেরিনটি উদ্ধার করতে দুই মাস সময় লাগতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ডুবোযানটির সাবেক কমান্ডিং অফিসার অ্যান্ডি কোলস।

তিনি বলেন, ৯৬ ঘণ্টার অক্সিজেনের মজুত থাকা এই সাবমার্সিবলের যাত্রীরা এরইমধ্যে মারা যেতে পারেন। যদিও তাদের উদ্ধার করা হয়ে থাকে।

রোববার পাঁচ আরোহী নিয়ে নিখোঁজ যানটিতে বুধবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত ২০ ঘণ্টারও কম সময় চলার মতো অক্সিজেন অবশিষ্ট ছিল। তবে সাবেক এই কমান্ডিং অফিসার অ্যান্ডি কোলস বলেছেন, আরোহীরা এরইমধ্যে হাইপোথার্মিয়া বা কার্বন ডাই অক্সাইডের বিষক্রিয়ায় মারা গিয়ে থাকতে পারেন। এরই মধ্যে উদ্ধার অভিযান জটিল পর্যায়ে পৌঁছেছে। তাই আরোহীসহ ডুবোযানটি উদ্ধার করতে দীর্ঘ এই সময় লাগতে পারে বলে উল্লেখ করেন অ্যান্ডি কোলস। 

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য মিররকে তিনি জানিয়েছেন, আমি মনে করি না যে ডুবোযানটিতে কার্বন ডাই অক্সাইড পরিশোধন এবং বাতাসকে পুনরায় সঞ্চালনের কোনো ব্যবস্থা আছে। তাই তারা সম্পূর্ণরূপে দমবন্ধ না হওয়ার আগেই সম্ভবত ঘুমন্ত বা অচেতন অবস্থায় চলে গেছেন। অন্য যে বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে তা হলো তিন হাজার ৮০০ মিটার নিচে সমুদ্রের তলদেশ অবিশ্বাস্যভাবে ঠান্ডা।

‘তারা সম্ভবত সেখানে কোনো শক্তি এবং আলো পায়নি। কারণ যদি যানটিতে কোনো যান্ত্রিক শক্তি থাকত, তাহলে তারা সমুদ্রের উপরিভাগে উঠে আসার চেষ্টা করত।’

এর আগে, আটলান্টিক মহাসাগরের তলদেশে নিখোঁজ ডুবোযানের সন্ধান চালানো তল্লাশির এলাকা থেকে একধরনের তীব্র আঘাতের শব্দ শোনা যায়। প্রতি ৩০ মিনিট পর পর এমন শব্দ শুনতে পান অনুসন্ধানী দলের সদস্যরা। আটলান্টিকের তলদেশে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে আগ্রহী এক কিশোরসহ পাঁচ পর্যটক নিয়ে গত রোববার নিখোঁজ যানটির সন্ধানে ‘ঘড়ির কাটার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে’ অনুসন্ধান চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। 

মঙ্গলবার এমন আওয়াজ পাওয়া যায়। ধারণা করা হচ্ছে- ডুবোযানটির ভেতর থেকে সেটিকে কেউ শক্ত ধাতব কিছু দিয়ে সজোরে আঘাত করছেন। প্রতি ৩০ মিনিট পরপর এমন শব্দ শোনা যাচ্ছে। খবর বিবিসি ও ডেইলি মেইল। 

আটলান্টিকের ২০ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। যে বিশাল এলাকায় এই তল্লাশি চলছে তা যুক্তরাষ্ট্রের কানেক্টিকাট অঙ্গরাজ্যের সমান। 

মধ্য আটলান্টিক মহাসাগরের সাড়ে ১২ হাজার ফুট গভীরে টাইটানিকের জাহাজের ধ্বংসাবশেষ দেখতে ৮ দিনের এই ভ্রমণের জন্য আড়াই লাখ ডলার (প্রায় ২ কোটি ৭০ লাখ ৬০ হাজার টাকা) খরচ করতে হয়।

নিখোঁজ ডুবোযানের আরোহীর পরিচয় প্রকাশ 

পাকিস্তানের অন্যতম ধনী ব্যক্তি এবং তার কিশোর ছেলে নিখোঁজ ডুবোযানের পাঁচজনের মধ্যে রয়েছেন। শাহজাদা দাউদ, ৪৮, যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক প্রিন্স ট্রাস্ট দাতব্য সংস্থার বোর্ড মেম্বার এবং তার ছেলে সুলাইমান দাউদ, ১৯, ছোট্ট ওই আন্ডারওয়াটার ক্রাফটের আরোহী ছিলেন। 

ব্রিটিশ বিলিয়নিয়ার হামিস হার্ডিং, বিশ্ববিখ্যাত ফরাসি পর্যটক পল-হেনরি নারজিওলট এবং ডুবোযানটির মালিক প্রতিষ্ঠান ওশানগেট-এর প্রধান নিবার্হী (সিইও) স্টকটন র‍্যাশ এই যানের পঞ্চম আরোহী ছিলেন। 

তারা সমুদ্রের গভীর অন্ধকারে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। সাড়ে ১২ হাজার ফুট পানির নিচে সেই ঐতিহাসিক ধ্বংসাবশেষ দেখার জন্য গিয়েছিলেন তারা। 

শাহজাদার স্ত্রী ক্রিস্টিনা দাউদ এবং মেয়ে আলিনাসহ অন্যান্যরা এখন তাদের সবশেষ অবস্থা জানতে যন্ত্রণাদায়ক অপেক্ষা সহ্য করছেন। এক বিবৃতিতে এমনটি জানিয়েছে দাউদ পরিবার। 

দাউদ পরিবার পাকিস্তানের সবচেয়ে ধনী পরিবারের মধ্যে একটি এবং যুক্তরাজ্যের সাথে এই পরিবারের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। 

১৯১২ সালে তৎকালীন বিশ্বের বৃহত্তম যাত্রীবাহী এই জাহাজ সাউদাম্পটন থেকে নিউইয়র্কের উদ্দেশ্যে প্রথম সমুদ্রযাত্রায় বিশাল বরফখণ্ডের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে ডুবে যায় টাইটানিক। জাহাজটিতে ২ হাজার ২০০ জন যাত্রী ও ক্রু ছিলেন। ভয়াবহ দুর্ঘটনায় তাদের মধ্যে এক হাজার ৫০০ জনেরও বেশি মারা যান।

১৯৮৫ সালে ধ্বংসাবশেষের সন্ধান পাওয়ার পর থেকে টাইটানিক নিয়ে ব্যাপক গবেষণা চলছে। প্রায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পর্যটক বিখ্যাত এই জাহাজের ধ্বংসাবশেষ দেখতে আটলান্টিকের তলদেশে ভ্রমণে যান।

ট্যাগস :

শেয়ার নিউজ


নিউজ কমেন্ট করার জন্য প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে লগইন করুন

© All rights reserved © "Daily SB NEWS"
Theme Developed BY Global Seba