আজঃ শুক্রবার ২০-০৯-২০২৪ ইং || খ্রিষ্টাব্দ

হজযাত্রীদের সবচেয়ে বড় ‘চ্যালেঞ্জ’ সৌদির গরম

Posted By Shuvo
  • আপডেটেড: মঙ্গলবার ২৭ জুন ২০২৩
  • / পঠিত : ৭০ বার

হজযাত্রীদের সবচেয়ে বড় ‘চ্যালেঞ্জ’ সৌদির গরম

৪৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় পুড়ছে সৌদি আরব। মরু আবহাওয়ার দেশ হওয়ায় প্রতিবছর জুন-জুলাই মাসে সাধারণভাবেই এই পরিমাণ তাপমাত্রা ওঠে সৌদিতে; কিন্তু বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে সেখানে যাওয়া হজযাত্রীদের জন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে এই গরম।

অনেক হজযাত্রীর বিশ্বাস, তীব্র এই গরম হজ করতে আসা লোকজনের হজের পূণ্য আরও বৃদ্ধি করবে। তাদেরই একজন আবদুল আল আসাদ। ব্রিটেন থেকে হজ করতে আসা ৪৮ বছর বয়সী এই হজযাত্রী এএফপিকে এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘হজ করা এত সহজ নয়। যদি তাই হতো— তাহলে যে কেউ হজ করতে পারত।’

হজের পুরো প্রক্রিয়াটিই হলো মহানবীর (স.) প্রদর্শিত পথে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশে। আল্লাহ আমাকে যা দিয়েছেন, সেজন্য তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশই আমার হজের মূল উদ্দেশ্য।’

তবে সৌদির জলবায়ুর ইতিহাস বলছে, প্রায় ১ হাজার ৪০০ বছর আগে ইসলামের আবির্ভাবের সময় গ্রীষ্মকালে দেশটির যে গড় তাপমাত্রা ছিল— তার তুলনায় বর্তমানে তাপমাত্রা বেশ খানিকটা বেড়েছে।

ওয়াশিংটনভিত্তিক সংস্থা মিডলইস্ট ইনস্টিটিউটের কর্মকর্তা করিম এলগেন্দি এএফপিকে জানান, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে গত চার দশকে সৌদির তাপমাত্রা ২ দশমিক ৫ ডিগ্রি বেড়েছে।

তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত সৌদিতে রেকর্ডকৃত সর্বোচ্চ দৈনিক তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে জলবায়ু পরিবর্তনের এই ধারা যদি অব্যাহত থাকে, সেক্ষেত্রে এই শতকের শেষ থেকে দেশটিতে গ্রীষ্মকালে ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা নিয়মিত ব্যাপার হয়ে উঠবে।’

‘এবং গ্রীষ্মকালে হজের মৌসুম পড়লে বাইরের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা হজযাত্রীদের জন্য হজ করা আরও কঠিন হবে তখন।’

পরিস্থিতি স্বাভাবিক নয়

সূর্যের প্রচণ্ড তাপে সৌদির পায়ে চলা পথঘাটগুলো উত্তপ্ত কড়াইয়ের মতো গরম হয়ে আছে। হাজিদের সুবিধার্থে মক্কায় কাবা শরিফের বাইরের টাইলস বিছানো পথে নিয়মিত পানি ছিটানো হচ্ছে, কিন্তু তা খুব একটা উপকারে আসছে না।

হজের আচার-অনুষ্ঠান পালনের ফাঁকে ফাঁকে হজযাত্রীদের প্রায় সবাই একটু ছায়াযুক্ত জায়গা খুঁজছেন বিশ্রামের জন্য।

তীব্র এই গরম হজযাত্রীদের হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিয়েছে। সৌদি সরকার হজযাত্রীদের জন্য ৩২ হাজার স্বাস্থ্যকর্মীকে হজযাত্রীদের স্বাস্থ্যসেবার জন্য মোতায়েন রেখেছে, সেই সঙ্গে হজযাত্রীদের বিনামূল্যে পানিও সরবরাহ করা হচ্ছে।

সূর্যের তাপ থেকে বাঁচতে অনেক হজযাত্রীর হাতে খোলা ছাতা পরিলক্ষিত হচ্ছে, যাদের ছাতা নেই— তারা জায়নামাজ দিয়ে মাথা ঢেকে রাখছেন।

৭০ বছর বয়সী হজযাত্রী নিবাল মোহাম্মদ কানাডা থেকে এসেছেন। এএফপিকে তিনি বলেন, ‘এই গরম স্বাভাবিক নয়। আমার মনে হচ্ছে— আমি নরকে এসে হাজির হয়েছি।’

‘হজ শেষ হওয়ার পর প্রথম ফ্লাইট ধরেই কানাডায় ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করব আমি,’ এএফপিকে বলেন নিবাল।

ইসলামের পঞ্চম স্থম্ভের নাম হজ। এই ধর্মের বিধান অনুযায়ী প্রত্যেক সামর্থবান মুসলিম নর-নারীর জন্য জীবনে অন্তত একবার হজ করা আবশ্যিক।

করোনা মহামারির কারণে সীমান্ত বিধিনিষেধ জারি থাকায় ২০২০ ও ২০২১ সালে বিদেশি হজযাত্রীরা হজ করতে যেতে পারেননি সৌদিতে। তবে চলতি বছর থেকে যাবতীয় বিধিনিষেধ তুলে নিয়েছে দেশটির সরকার।

সৌদির হজ ও ওমরাহ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর ২০ লাখেরও বেশি হজযাত্রীর আগমন ঘটেছে দেশটিতে।

ট্যাগস :

শেয়ার নিউজ


নিউজ কমেন্ট করার জন্য প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে লগইন করুন

© All rights reserved © "Daily SB NEWS"
Theme Developed BY Global Seba