আজঃ মঙ্গলবার ১৭-০৯-২০২৪ ইং || খ্রিষ্টাব্দ

হাজার কোটি টাকার ঋণ বিলিয়ে ব্যাংক কর্মকর্তার গাফিলতি, শোকজ

Posted By Shuvo
  • আপডেটেড: শুক্রবার ২১ জুলাই ২০২৩
  • / পঠিত : ১৬৮ বার

হাজার কোটি টাকার ঋণ বিলিয়ে ব্যাংক কর্মকর্তার গাফিলতি, শোকজ

এক হাজার ১২৫ কোটি ৮৪ লাখ টাকা খেলাপি ঋণের একটি মামলায় গাফিলতির জন্য বাদী ও বেসরকারি এবি ব্যাংক চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ শাখার ব্যবস্থাপককে শোকজ করেছেন আদালত। 

একই সঙ্গে অর্থঋণ আদালত আইন ২০০৩ এর ৪৬(৫) ধারা মোতাবেক তার বিরুদ্ধে শৃঙ্খলামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর কেন আদেশের কপি পাঠানো হবে না তা আদালতে উপস্থিত হয়ে কারণ দর্শানোর জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। 

বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতের বিচারক মুজাহিদুর রহমান এ আদেশ দিয়েছেন। বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম। 

আদালত সূত্র জানায়, এবি বাংক লিমিটেড চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ শাখার ১ হাজার ১২৫ কোটি ৮৪ লাখ টাকা খেলাপি ঋণ আদায় করার জন্য এ মামলা দায়ের করা হয়। মামলার আরজি পর্যালোচনায় দেখা যায়, ১ নম্বর বিবাদী চট্টগ্রামের খুলশী এলাকার মাহিন এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের অনুকূলে ব্যাংক সর্বশেষ ২০১৭ সালের ১৭ অক্টোবর তারিখের মঞ্জুরিপত্রের মাধ্যমে ঋণ বিতরণ করে। ঋণের মেয়াদ পরের বছর ৩০ জানুয়ারি মেয়াদোত্তীর্ণ হয়। ২০১৯ সালের ১৭ জুন ওই বিবাদীর খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল করা হয়। সেই তফসিলের মঞ্জুরিপত্র অনুযায়ী বিবাদীদের দায় পড়েছিল ৭২৯ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। পুনঃতফসিল মঞ্জুরিপত্রে বিবাদীরা ২টি ত্রৈমাসিক কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হলে তা বাতিল করে সম্পূর্ণ খেলাপি ঋণ আদায়ের জন্য অর্থঋণ আদালতে মামলা করার শর্ত ছিল। কিন্তু একটি টাকা পরিশোধ না করা সত্ত্বেও সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তা বিবাদীদের বিরুদ্ধে কোনো আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। 

ঋণের বিপরীতে ৪ নম্বর বিবাদী আশিকুর রহমান লস্করের কাছ থেকে তারিখবিহীন চেক নেওয়ার শর্ত ছিল। কিন্তু ওই চেক ব্যবহার করে কোনো মামলা দায়ের করা হয়নি। বন্ধকী স্থাবর সম্পত্তি অর্থঋণ আদালত আইন ২০০৩ এর ১২(৩) ধারা মোতাবেক নিলামে বিক্রয়ের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হয়নি। আরজি দৃষ্টেই প্রমাণ হয় বিপুল পরিমাণ খেলাপি ঋণ আদায়ের ক্ষেত্রে বাদী ব্যাংক কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি।

অন্যদিকে ৭২৯ কোটি ৪৬ লাখ টাকা পুনঃতফসিল করা ঋণ অনাদায়ী থাকা সত্ত্বেও বিবাদীদের নতুন করে ২৫৫ কোটি টাকা ঋণ মঞ্জুর করা হয় ২০১৯ সালের ২৭ জুন। একক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঋণ প্রাপ্তির বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত সীমা অতিক্রম করে বিশেষ সুবিধাসহ এ ঋণ মঞ্জুর করা হয়। প্রাথমিক পর্যালোচনায় প্রমাণ হয়, বাদী ব্যাংক বিপরীতে সহায়ক জামানত হিসেবে বন্ধক রাখা সম্পত্তি পর্যাপ্ত নয়। খেলাপি ঋণ আদায়ে অর্থঋণ আদালত আইন ২০০৩ এর ৪৬ ধারা মোতাবেক যথাসময়ে এ মামলা দায়ের করা হয়নি। তাই অর্থঋণ আদালত আইন ২০০৩ এর ৪৬(৫) ধারা মোতাবেক বাদী ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপকের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এবি ব্যাংক লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর কেন আদেশের কপি পাঠানো হবে না তা আগামী ১২ আগস্ট তারিখে আদালতে উপস্থিত হয়ে কারণ দর্শানোর জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়।

আদালতের আদেশে বলা হয়, মামলাটিতে বাদীর পক্ষে দাখিল করা আরজি সংশোধনের দরখাস্ত মঞ্জুর করা হল। বিবাদীদের বিরুদ্ধে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রচারের মাধ্যমে সমন জারি করার আদেশ দেওয়া হল। বিবাদী আশিকুর রহমান লস্করের নামে থাকা মেঘনা ব্যাংক লিমিটেডেরর ২ কোটি ১২ লাখ শেয়ার এবং বিবাদী মোহাম্মদ আতিউর রহমান লস্করের নামে থাকা গোল্ডেন লাইফ ইন্সুরেন্স লিমিটেড এর ৪ লাখ ৬০ হাজার শেয়ার পরবর্তী আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই মামলার ক্রোকাবদ্ধ হলো। শেয়ারসমূহ যেন বিবাদীরা হস্তান্তর করতে না পারে সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আদেশের কপি মেঘনা ব্যাংক লিমিটেড ও গোল্ডেন লাইফ ইন্সুরেন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর পাঠানো হোক।

ট্যাগস :

শেয়ার নিউজ


নিউজ কমেন্ট করার জন্য প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে লগইন করুন

© All rights reserved © "Daily SB NEWS"
Theme Developed BY Global Seba