আজঃ সোমবার ২৩-০৯-২০২৪ ইং || খ্রিষ্টাব্দ

গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের ফাইল গায়েব, জালিয়াতির করে সম্পদের পাহাড় : দেলোয়ার আটক

Posted By Shuvo
  • আপডেটেড: বুধবার ০২ Aug ২০২৩
  • / পঠিত : ৯৪ বার

গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের ফাইল গায়েব, জালিয়াতির করে সম্পদের পাহাড় : দেলোয়ার আটক

সনদ জালিয়াতি ও দুর্নীতির অভিযোগে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের (জাগৃক) উচ্চমান সহকারী দেলোয়ার হোসেনকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। সচিবালয় থেকে তার বিরুদ্ধে মামলাও করা হয়েছে।  

আজ (মঙ্গলবার) বিকালে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে সনদ জালিয়াতির অভিযোগ ছিল। সে বিষয়ে আজ মন্ত্রণালয়ে শুনানি হয়। তদন্তে প্রমাণ পাওয়ায় তার বিরুদ্ধে মামলা করে শাহবাগ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।


সচিব বলেন, তার বিরুদ্ধে ফাইল আটকে রাখা, ফাইল গায়েব করাসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। এসব অনিয়ম করে তিনি সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। এবং বিদেশে বাড়ি করার অভিযোগ রয়েছে। তিনি যেন বিদেশে যেতে না পারেন সে বিষয়ে আমরা ইমিগ্রেশনকে চিঠি লিখেছি। এছাড়া দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) আজ আমরা চিঠি দেবো।   

দেলোয়ারের বিরুদ্ধে অভিযোগ কী? কেন তাকে আটক করা হলো এমন প্রশ্নের জবাবে সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন বলেন, আমাদের কাছে অনেক অভিযোগ আসে। মূল অভিযোগগুলো আসে জমি নিয়ে। কারণ, সেখানে জমি সংক্রান্ত কাজ বেশি হয়। সে জমির ফাইলগুলো কিছু লোকের কাছে জিম্মি। ফলে সেবা গ্রহিতারা সেবা না পেয়ে নানা ধরনের হয়রানির শিকার হন। আমাদের কাছে আসা অভিযোগের মধ্যে একটি হলো সেখানে একটা সিবিএ আছে। সেটার নেতা বা সাধারণ সম্পাদক হলেন দেলোয়ার হোসেন।  তার পদ উচ্চমান সহকারী। এই পদের জন্য যে শিক্ষাগত যোগ্যতা লাগে সেটা তার নেই।  এইচএসসি সার্টিফিকেট জালিয়াতি করে চাকরি নিয়েছেন তিনি। অনেক দিক থেকে অভিযোগ আসার পর আমরা বিষয়টিকে তলিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি করেছি। তদন্তের এক পর্যায়ে তার কাছে সার্টিফিকেট চাওয়া হলে সে একটা সার্টিফিকেট দেয় আমাদের। এরপর জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের কাছে তার নিয়োগ সংক্রান্ত সকল কাগজপত্র চাওয়া হলে সেগুলো তারা দেখাতে পারেনি।  

কাজী ওয়াছি উদ্দিন বলেন, যেহেতু উচ্চমান সহকারী হতে হলে এইচএসসি পাস হতেই হবে। এজন্য উপসচিবকে কুমিল্লা বোর্ডে ও কলেজে পাঠানো হয়। কিন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষ কোনো কাগজপত্র দেয়নি। কোনো ধরনের সহযোগিতা করেনি। এরপর বোর্ডের চেয়ারম্যানের সাথে কথা বললে তিনিও প্রথমে কথা বলতে রাজি হননি। পরে যখন বললাম যে, দেলোয়ার হোসেনের সার্টিফিকেটে বাবার নাম আব্দুল আলীম। তখন বলেন দেলোয়ার ২০১৯ সালে একটি এভিডেভিট করিয়েছেন। সেখানে দেখা গেছে সার্টিফিকেটে যেখানে বাবার নামের স্থানে শিশু মিয়া ছিল, সেটা পরিবর্তন করে আব্দুল আলীম করা হয়েছে। এরপর আমরা দেলোয়ার হোসেনের এলাকায় বা উপজেলায় খোঁজ নিয়ে জানতে পারি এই নামে আরও এক ব্যাক্তি রয়েছে, যার বাবার নাম শিশু মিয়া। 


সচিব বলেন, আমরা এভাবে তদন্ত করে পুরোপুরি নিশ্চিত হয়েছি যে তার এইচএসসির সার্টিফিকেট জাল। তদন্তে প্রামাণিত হয়েছে দেলোয়ার হোসেন সনদ জাল করে চাকরি নিয়েছেন৷ এ ছাড়াও তার নামে বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। সেসব বিষয়ে আমরা দুদককে বলেছি তদন্ত করতে। সে আসলে অনেক টাকার মালিকও। এর আগে বিভিন্ন সংস্থা তার বিরুদ্ধে তদন্ত করেছে, সে সব জায়গায় নিষ্কৃতি পেয়েছে। সেজন্যই আজকে আমরা তাকে ধরেছি। 

দেলোয়ারকে কেন বদলি করা হয়নি? এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি বলার পর দুই জনকে বদলি করা হলেও দেলোয়ারকে সরানো হয়নি। কারণ বলা হয়েছিল সে সিবিএ করে, সেজন্য তাকে বদলি করা যাবে না। 

সেবা গ্রহীতাকে হয়রানির কতোগুলো অভিযোগ এসেছে, কতদিন আগে এসেছে, চেয়ারম্যানকে অভিযোগ না দিয়ে আপনার কাছে কেন এলো- এসব বিষয়ে জানতে চাইলে সচিব বলেন, মানুষ মনে করে এখানে অভিযোগ দিলে প্রতিকার হবে। সে কারণে এখানে দেওয়া হয়েছে। সেখানেও অভিযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু প্রতিকার তো এখান থেকে করতে হয়। এ পর্যন্ত শত শত অভিযোগ এসেছে আমাদের কাছে। দুই মাস হলো আমরা এ বিষয়ে কাজ শুরু করেছি। এ ছাড়া ভূমি নিয়ে যে অভিযোগ সেগুলো মোটামুটি অনেক আগে থেকে আসছে। চেয়ারম্যান কিছুর প্রতিকার করেছেন, কিছু পারে নাই। 

কী ধরনের অভিযোগ জমা পড়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোনো ফাইল হারিয়ে যাচ্ছে, গায়েব হয়ে যাচ্ছে, ফাইল আটকে রাখা হচ্ছে।

ট্যাগস :

শেয়ার নিউজ


নিউজ কমেন্ট করার জন্য প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে লগইন করুন

© All rights reserved © "Daily SB NEWS"
Theme Developed BY Global Seba