আজঃ মঙ্গলবার ২৪-০৯-২০২৪ ইং || খ্রিষ্টাব্দ

প্রশ্নফাঁস করে হাসপাতাল-মাছের ঘের-হোটেলের মালিক হয়েছেন ডাক্তার

Posted By Shuvo
  • আপডেটেড: মঙ্গলবার ২২ Aug ২০২৩
  • / পঠিত : ১৬৮ বার

প্রশ্নফাঁস করে হাসপাতাল-মাছের ঘের-হোটেলের মালিক হয়েছেন ডাক্তার

মেডিকেল কলেজ ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস চক্রের আরও পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

গ্রেপ্তাররা হলেন– ডা. মো. ইউনুচ উজ্জামান খাঁন তারিম (৪০), ডা. লুইস সৌরভ সরকার (৩০), ডা. মুসতাহিন হাসান লামিয়া (২৫), ডা. শর্মিষ্ঠা মন্ডল (২৬) ও ডা. নাজিয়া মেহজাবিন তিশা (২৪)। এসময় তাদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন ছয়টি, ল্যাপটপ দুটি, বিভিন্ন ব্যাংকের চেকবই, ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড জব্দ করা হয়।

রোববার (২০ আগস্ট) রাতে খুলনার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি l

সোমবার (২১ আগস্ট) সন্ধ্যায় সিআইডির মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজাদ রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আজাদ রহমান জানান, গত ১৩ আগস্ট মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িত সাত চিকিৎসকসহ ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গ্রেপ্তারদের মধ্যে আটজন দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের দেওয়া বিপুল সংখ্যক ব্যাংকের চেক এবং এডমিট কার্ড জব্দ করা হয়। এর আগে গ্রেপ্তার হওয়া এ চক্রের মাস্টারমাইন্ড জসীম উদ্দিন ভূঁইয়ার কাছ থেকে একটি গোপন ডায়েরি জব্দ করা হয়। ডায়েরিতে সারা দেশে ছড়িয়ে থাকা তার চক্রের অন্য সদস্যদের নাম পাওয়া যায়।

তিনি জানান, এসব তথ্যের ওপর ভিত্তি করে খুলনার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মেডিকেল প্রশ্নফাঁস চক্রের অন্যতম মূলহোতাসহ মোট পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডির সাইবার ইউনিট। গ্রেপ্তারদের মধ্যে ডা. মো. ইউনুচ উজ্জামান খান তারিম খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডাক্তার। খুলনা শহরের আলোচিত মেডিকেল ভর্তি কোচিং সেন্টার থ্রি ডক্টরসের মালিক তিনি। ডাক্তারি পেশা বাদ দিয়ে জড়ান কোচিং ব্যবসায়। প্রতিষ্ঠা করেন থ্রি ডক্টরস কোচিং সেন্টার। তিনি নিজেকে ডাক্তার তৈরির কারিগর হিসেবে পরিচয় দেন।

মেডিকেল প্রশ্নফাঁসের মাধ্যমে অবৈধভাবে শত শত শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তি করিয়েছেন ডা. তারিম। মেডিকেল প্রশ্নফাঁসের গুরুত্বপূর্ণ এই সদস্য শত শত শিক্ষার্থীকে এভাবে ভর্তি করিয়ে কামিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। তার এবং তার স্ত্রীর অ্যাকাউন্টে প্রায় ২৫ কোটি টাকার লেনদেন পাওয়া গেছে। হাসপাতাল, ফ্ল্যাট, জমি, মাছের ঘের, হোটেল শেয়ারসহ গড়েছেন বিপুল সম্পদ। ডা. তারিমের বিরুদ্ধে একাধিক গোয়েন্দা প্রতিবেদনে আগেও প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ ওঠে।

আজাদ রহমান বলেন, ডা. লুইস সৌরভ সরকার খুলনা মেডিকেল কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী। খুলনা শহরের আলোচিত মেডিকেল ভর্তি কোচিং সেন্টার থ্রি ডক্টরসের শিক্ষক। বর্তমানে একটি বেসরকারি এনজিওতে মেডিকেল অফিসার হিসেবে কর্মরত। ডা. মুসতাহিন হাসান লামিয়া ২০১৫-১৬ সেশনের মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় জাতীয় মেধায় ১১তম স্থান অর্জন করেন। তিনি খুলনা থ্রি ডক্টরস কোচিং সেন্টারের পরিচালক ডা. ইউনুসুজ্জামান খান তারিমের স্পেশাল ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। এছাড়াও তাকে বাসায়ও পড়াতেন তারিম। কম মেধাবী হওয়ার পরও তারিমের কাছ থেকে প্রশ্ন পেয়ে তিনি মেডিকেলে ভর্তি হয়েছেন। তারিমের ঘনিষ্ঠজন ও তৎকালীন কোচিংয়ের তিনজন শিক্ষক তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন। জাতীয় মেধায় ১১তম হওয়ার পরও তিনি চারটি ফাইনাল প্রফেশনাল এক্সামিনেশনের সব সাবজেক্টে ফেল করেছেন।

পরবর্তীতে একাধিকবারের চেষ্টায় পাশ করেছেন। লামিয়ার প্রশ্ন পেয়ে চান্স পাওয়ার বিষয়টি খুলনার চিকিৎসক মহলে ওপেন সিক্রেট। লামিয়ার ভর্তির জন্য তার স্বামী শেখ ওসমান গনি ও ডা. তারিমের মধ্যে প্রায় ১৫ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে বলে জানা যায়। এছাড়া ডা. শর্মিষ্ঠা মন্ডল ও ডা. নাজিয়া মেহজাবিন তিশা উভয়েই ২০১৫-১৬ সেশনের মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় থ্রি ডক্টরসের মালিকের কাছ থেকে ফাঁস করা প্রশ্ন কিনে মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন।

ট্যাগস :

শেয়ার নিউজ


নিউজ কমেন্ট করার জন্য প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে লগইন করুন

© All rights reserved © "Daily SB NEWS"
Theme Developed BY Global Seba