আজঃ সোমবার ২৫-১১-২০২৪ ইং || খ্রিষ্টাব্দ

অলৌকিকভাবে রক্ষা পেলো শিশু হোসাইন

Posted By Shuvo
  • আপডেটেড: শনিবার ২৩ Sep ২০২৩
  • / পঠিত : ১৭৩ বার

অলৌকিকভাবে রক্ষা পেলো শিশু হোসাইন

: মিরপুরের ঢাকা কমার্স কলেজ সংলগ্ন ঝিলপাড় বস্তির সামনের রাস্তায় জমে থাকা পানিতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে প্রাণ গেছে একই পরিবারের তিনজনসহ মোট চারজনের। অলৌকিকভাবে বেঁচে গেছে ৭ মাসের শিশু হোসাইন। মর্মান্তিকেএক ঘটনায় শিশু হোসাইনের বাবা, মা, বোনসহ তাদের বাঁচাতে আসা অনিক নামের এক যুবক নিহত হয়। মায়ের কোলে থেকে ছিটকে পড়ে যাওয়ায় প্রাণে রক্ষা পায় শিশু হোসাইনের। 

গতকাল রাতে ওই রাস্তায় জমে থাকা পানির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলেন মিজান (৩০) ও তার স্ত্রী মুক্তা বেগম (২৫)। সঙ্গে ছিল মেয়ে লিমা (৭) ও ছেলে হোসাইন। হঠাৎ করে তারা পড়ে গেলে তাদের তুলতে এগিয়ে আসেন অনিক নামে একজন অটোরিকশাচালক। হোসাইনকে তিনি পানি থেকে তুলে দিতে পারলেও লিমাকে তুলতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে তিনিও চলে গেছেন না ফেরার দেশে। 

শনিবার সকালে শিশু হোসাইনকে নিয়ে মিরপুর মডেল থানায় আসেন আমেনা বেগম নামে এক নারী। সেখানে তিনি শিশু হোসাইনের বেঁচে যাওয়া ঘটনার বর্ণনা করেন। 

তিনি বলেন, ‘হোসাইনের মা যখন পানিতে পড়ে যায় তখন, হোসাইন মায়ের কোল থেকে ছিটকে পড়ে যায় পানিতে। এ সময় অনিক সঙ্গে সঙ্গে এসে হোসাইনকে পানি থেকে তুলে আমার কোলে দেয়। পরে আমি তাকে আমার বাসায় নিয়ে প্রথমে শরীরে গরম তেল দেই। এরপর তাকে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখান থেকে ডাক্তার হোসাইনকে নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলে। রাতে তাকে সেখানে নিয়ে যাই, চিকিৎসার পর সকালে ডাক্তার বলে হোসাইন এখন সুস্থ, তাকে বাসায় নিয়ে যাওয়ার জন্য। পরে আমি জানতে পারি হোসাইনের দাদা ও নানা মিরপুর মডেল থানায় আছে, তখন আমি এখানে আসি’।

আমেনা বেগম আরও বলেন, ‘হোসাইনকে অনিকের মাধ্যমে আল্লাহ বাঁচিয়েছেন। না হলে একই ঘটনায় তার মা-বাবা ও বোন এবং অনিক মারা গেছে, তার তো বাঁচার কথা ছিল না। এখন হোসাইনকে কোলে নেওয়ার বা দেখাশোনার লোক নেই। হোসাইনের নানা ও দাদা তার মা, বাবা ও বোনের মরদেহ নেওয়ার জন্য থানা ও হাসপাতালে দৌড়াদৌড়ি করছে। তাই আমি তাকে আপাতত দেখাশোনা করছি। তাদের কাজ শেষ হলে আমি হোসাইনকে তার নানা ও দাদার কাছে বুঝিয়ে দেব।

মিজানের স্বজন ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, মিজানের গ্রামের বাড়ি বরিশালের ঝালকাঠিতে। সে গত কয়েক বছর ধরে পরিবার নিয়ে মিরপুর চিড়িয়াখানা রোডে বসবাস করে একটি ভাড়া বাসায়। মিজান মিরপুর এলাকায় ভাসমান দোকানে শরবত বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। গতকাল রাতে তিনি স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে ঝিলপাড় বস্তিতে শ্বশুরবাড়িতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে নিজ বাসায় ফেরার পথে প্রাণ গেল তাদের। 

এ বিষয়ে মিরপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন বলেন, অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগের বিষয়টি আমরা জানতে পেরেছি। এ বিষয়ে আমাদের তদন্ত চলমান রয়েছে। এ ছাড়া নিহতের স্বজনরা আমাদের কাছে একটি অভিযোগ করেছে। অবহেলিতজনিত মৃত্যুর বিষয়ে। অভিযুক্তি মামলা আকারে দায়েরের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ থেকে শুরু করে এই মৃত্যুর পেছনে কারো কোন দায় আছে কি না সেটি আমরা তদন্ত করে দেখব। তদন্ত কারো দায় পেলে আমরা যথাযোগ্য আইনি প্রক্রিয়া গ্রহণ করব।

ট্যাগস :

শেয়ার নিউজ


নিউজ কমেন্ট করার জন্য প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে লগইন করুন

© All rights reserved © "Daily SB NEWS"
Theme Developed BY Global Seba