আজঃ শুক্রবার ২০-০৯-২০২৪ ইং || খ্রিষ্টাব্দ

শিখ নেতা হত্যা: মোদির কাছে উদ্বেগ জানিয়েছেন বাইডেন

Posted By Shuvo
  • আপডেটেড: শনিবার ২৩ Sep ২০২৩
  • / পঠিত : ৫০ বার

শিখ নেতা হত্যা: মোদির কাছে উদ্বেগ জানিয়েছেন বাইডেন

কানাডার শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জার হত্যার ঘটনায় ভারতের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। চলতি মাসে ভারতে অনুষ্ঠিত জি-২০ সম্মেলনের সময় ওই উদ্বেগ জানান তিনি।

এছাড়া একই বিষয়ে মোদির কাছে উদ্বেগ জানিয়েছেন মার্কিন মিত্র আরও কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান। মিডিয়া রিপোর্টের বরাত দিয়ে শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খালিস্তানপন্থি শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জার হত্যার ঘটনায় ভারত সরকারের জড়িত থাকার বিষয়ে কানাডা যে অভিযোগ তুলেছে সে বিষয়ে চলতি মাসে নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত জি-২০ সম্মেলনের সময়ই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং অন্যান্য নেতারা। বৃহস্পতিবার প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস এই তথ্য জানিয়েছে।

বিষয়টি সম্পর্কে জানেন এমন তিনজনের বরাত দিয়ে সংবাদপত্রটি বলেছে, গোয়েন্দা সহযোগিতা বিষয়ক জোট ‘ফাইভ আইস’-এর বেশ কয়েকটি সদস্য দেশ ভারতে জি-২০ সম্মেলন চলাকালীন প্রধানমন্ত্রী মোদির কাছে কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়ায় শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা হরদীপ সিং নিজ্জারের হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি উত্থাপন করেছিল।

প্রসঙ্গত, ‘ফাইভ আইস’ হলো বিশ্বের পাঁচটি দেশের একটি গোয়েন্দা সহযোগিতা নেটওয়ার্ক। এই নেটওয়ার্কের সদস্য দেশগুলো হলো— যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ড। এই নেটওয়ার্কের মাধ্যমে এসব দেশ একে অপরের সঙ্গে গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান করে থাকে।

অবশ্য ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের এই রিপোর্টের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে হোয়াইট হাউস তাৎক্ষণিকভাবে কোনও মন্তব্য করেনি।

এর আগে কানাডার শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জার হত্যার পেছনে ভারত সরকারের হাত থাকতে পারে বলে মন্তব্য করেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়া প্রদেশের একটি শিখ মন্দিরের বাইরে গত ১৮ জুন গুলি করে হত্যা করা হয় ৪৫ বছর বয়সী হরদীপ সিং নিজ্জারকে।

গত সোমবার কানাডার হাউস অব কমন্সের সভায় প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো বলেন, কানাডার গোয়েন্দা সংস্থা শিখ নেতা নিজ্জারের হত্যার সাথে ভারত সরকারের সংশ্লিষ্টতার ‘বিশ্বাসযোগ্য’ প্রমাণ খুঁজে পেয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘কানাডার গভীর উদ্বেগের কথা ভারত সরকারের শীর্ষ নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে। গত সপ্তাহে জি টুয়েন্টি সম্মেলনের মধ্যে বিষয়টি আমি ব্যক্তিগতভাবে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী মোদির কাছে স্পষ্ট করে দিয়েছি।’

চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে জি-২০ জোটের শীর্ষ সম্মেলন ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত হয়। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোও ওই সম্মেলনে অংশ নিয়েছিলেন এবং সেখান থেকে দেশে ফিরে যাওয়ার কয়েকদিন পরই কানাডার পার্লামেন্টে দেওয়া ভাষণে শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জার হত্যার ঘটনায় ভারতের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ প্রকাশ্যে আনেন।

ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস বলছে, শিখ নেতা নিজ্জারকে হত্যার বিষয়টি কানাডা তার মিত্র দেশগুলোকে সরাসরি মোদির কাছে উত্থাপন করার জন্য অনুরোধ করেছিল এবং এরপরই সেসব দেশের নেতারা জি-২০ সম্মেলনে এ বিষয়ে মোদির সঙ্গে কথা বলেন।

এদিকে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান বৃহস্পতিবার বলেছেন, কানাডায় শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতার হত্যার বিষয়ে অটোয়ার অভিযোগ সামনে আসার পর যুক্তরাষ্ট্র উচ্চপর্যায়ে ভারতীয়দের সাথে যোগাযোগ করছে এবং ভারতকে এই বিষয়ে কোনও ‘বিশেষ ছাড়’ দিচ্ছে না ওয়াশিংটন।

এছাড়া শিখ নেতা নিজ্জার হত্যার তদন্তে ভারতকে সহযোগিতা করতেও বলেছে যুক্তরাষ্ট্র। গত বুধবার হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা মুখপাত্র জন কিরবি বলেন, গত জুনে কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়ায় একজন শিখ নেতার হত্যাকাণ্ডে ভারতীয় এজেন্টদের সম্ভাব্য জড়িত থাকার অভিযোগ নিয়ে হোয়াইট হাউস ‘গভীরভাবে উদ্বিগ্ন’।

এই ঘটনায় ভারতীয় কর্মকর্তাদের যেকোনও তদন্তে সহযোগিতা করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র উৎসাহিত করে বলেও জানান তিনি। এছাড়া কানাডা ভারতের দিকে ওই গুরুতর অভিযোগ তোলার প্রেক্ষিতে যুক্তরাজ্য আর অস্ট্রেলিয়াও জানিয়েছে, তারা কানাডার নাগরিকের হত্যা তদন্তের দিকে নজর রাখছে।

অবশ্য কানাডার এই অভিযোগ ভারত প্রত্যাখ্যান করেছে এবং এসব অভিযোগকে ‘অযৌক্তিক’ বলেও অভিহিত করেছে। তবে উভয় দেশের এই সংকট কানাডা-ভারত সম্পর্কের ক্ষেত্রে আরও ক্ষত সৃষ্টি করেছে। ভারত বৃহস্পতিবার কানাডিয়ান নাগরিকদের ভিসা পরিষেবা স্থগিত করেছে এবং অটোয়াকে ভারতে তার কূটনৈতিক উপস্থিতি কমাতে বলেছে।

রয়টার্স বলছে, উভয় দেশের মধ্যকার এই পরিস্থিতি কিছু পশ্চিমা দেশকে কঠিন অবস্থায় ফেলেছে কারণ কানাডা পশ্চিমা দেশগুলোর দীর্ঘস্থায়ী অংশীদার এবং দীর্ঘদিনের মিত্র। অন্যদিকে পশ্চিমা দেশগুলো আবার এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনের প্রভাব মোকাবিলায় ভারতের সঙ্গে শক্তিশালী সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাইছে।

ট্যাগস :

শেয়ার নিউজ


নিউজ কমেন্ট করার জন্য প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে লগইন করুন

© All rights reserved © "Daily SB NEWS"
Theme Developed BY Global Seba