আজঃ সোমবার ২৫-১১-২০২৪ ইং || খ্রিষ্টাব্দ

মমতাজের মামলায় বিব্রত বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশন

Posted By Shuvo
  • আপডেটেড: বৃহস্পতিবার ১২ Oct ২০২৩
  • / পঠিত : ৫৯ বার

মমতাজের মামলায় বিব্রত বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশন

ডেস্ক: বাংলাদেশের সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমের বিরুদ্ধে শক্তি শংকরের প্রতারণায় মামলায় এবার কলকাতা হাইকোর্টে অস্বস্তির মুখে পড়ল বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশন। বারবার কলকাতা হাইকোর্টে মমতাজের হাজিরা এড়ানোর কারণে মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) কলকাতাস্থ বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনের কাছে রিপোর্ট তলব করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। 

টাকা নিয়েও অনুষ্ঠান করতে না আসায় বিশ্বাসভঙ্গ, প্রতারণাসহ একাধিক মামলায় গত আগস্ট মাসে মমতাজের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে বহরমপুর আদালত। এই মামলার পরবর্তী শুনানের দিন গত ৮ সেপ্টেম্বর ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুর আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পান মমতাজ। 


এরপরেই জামিনের বিরোধিতা করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন মামলাকারী শক্তি শঙ্কর বাগচী। শুধু মমতাজ নয়, মমতাজকে জামিন দেয়ায় বহরমপুর চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অলকেশ দাসের বিরুদ্ধেও পক্ষপাতিত্বের হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন শক্তি শঙ্কর। হাইকোর্টে এই মামলার ৪ অক্টোবর প্রথম দিনের শুনানিতেই বিচারক শুভ্রা ঘোষ মমতাজ কে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ জারি করেন।

মঙ্গলবার ছিল হাইকোর্টে এই হাইপ্রোফাইল মামলার দ্বিতীয় দিনের শুনানি। যথারীতি এদিনও আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে হাইকোর্টে হাজিরা দেননি মামলার মূল অভিযুক্ত মমতাজ বেগম। আদালতে মমতাজের পক্ষে হাজির ছিলেন না কোনোও আইনজীবীও। 

এমন পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার শুনানির শুরুতেই রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। সরকারি আইনজীবির উপস্থিতিতেই বিচারপতি কলকাতার কড়েয়া থানা ও কসবা থানার মাধ্যমে বাংলাদেশ ডেপুটি হাই একটি নোটিশ পাঠানোর নির্দেশ দেন। নোটিশে বিচারপতি জানান আগামী ৭ দিনের মধ্যে ডেপুটি হাইকমিশনকে মমতাজের বিষয়ে রিপোর্ট জমা দিতে হবে। 

মমতাজ বেগম কেন হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে হাইকোর্টে হাজিরা দিলেন না। সেই বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে বলা হয় হয়েছে ওই রিপোর্টে। আগামী ২৩ অক্টোবর এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ওই রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে পরবর্তী নির্দেশ দেবেন বিচারপতি। 

মামলার বিষয়ে মঙ্গলবার শক্তি শঙ্কর বাগচী বলেন এটা খুবই লজ্জার । একজন স্বনামধন্য গায়িকার জন্য এই মামলায় বাংলাদেশ ডেপুটি হাই কমিশন ও বাংলাদেশের নাম জড়িয়ে যাচ্ছে।


অন্যদিকে বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে এখনো পর্যন্ত কলকাতা হাইকোর্টের এমন কোনোও নোটিশ ডেপুটি হয় কমিশন পায়নি। তবে নোটিশ এলেও তৃতীয় পক্ষ হিসেবে হাইকমিশন এমন কোন নোটিশ গ্রহণ করবে না এবং তার উত্তরও দেবে না। 

প্রসঙ্গত, প্রায় চৌদ্দ বছর আগে পশ্চিমবঙ্গে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নিয়মিত অংশ নিতেন মমতাজ। ২০০৪ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গান গাওয়ার জন্য সেখানকার শক্তিশঙ্কর বাগচী নামে এক ইভেন্ট অর্গানাইজার এর সাথে গায়িকার লিখিত চুক্তি হয়। সেইমতো ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে বহরমপুরের একটি অনুষ্ঠানে প্রধান শিল্পী হিসেবে মমতাজকে প্রায় ১৪ লাখ রুপির বিনিময়ে বায়না করেছিলেন উদ্যোক্তারা।

তবে অভিযোগ, টাকা নেয়ার পরও অনুষ্ঠানে হাজির হননি গায়িকা। যথারীতি অনুষ্ঠানস্থলে ভাঙচুর হয়। চরম হেনস্তার মুখে পড়তে হয় অনুষ্ঠানের আয়োজক শক্তিশঙ্কর বাগচীকে। পরে টাকা ফেরত দিতেও অস্বীকার করেন মমতাজ। এরপর চুক্তিভঙ্গের অভিযোগ নিয়ে স্থানীয় থানার দ্বারস্থ হন শক্তি। কিন্তু থানা অভিযোগ গ্রহণ করতে অস্বীকার করে।

এরপর বাধ্য হয়ে বহরমপুর আদালতের দ্বারস্থ হন শক্তি। মমতাজের বিরুদ্ধে বিশ্বাসভঙ্গ, প্রতারণাসহ একাধিক ধারায় মামলা করেন। সেই সূত্রে ২০০৯ সালে মমতাজের বিরুদ্ধে সমন জারি করে আদালত। পরে সমন কার্যকর না করায় তার বিরুদ্ধে জারি হয় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা। এরই মধ্যে নিম্ন আদালত থেকে আগাম জামিন নিয়ে আসেন গায়িকা।

পরে নিম্ন আদালতের নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন শক্তিশঙ্কর বাগচী। ২০১০ সালে নিম্ন আদালতের নির্দেশ খারিজ করে মমতাজের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি রাখে কলকাতা হাইকোর্ট। তবে মামলায় সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়ে একে একে তিনবার আগাম জামিন পেয়ে যান গায়িকা। এর পরেই ফের নিম্ন আদালতের রায়ে আস্থা হারিয়ে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন মামলাকারী।

ট্যাগস :

শেয়ার নিউজ


নিউজ কমেন্ট করার জন্য প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে লগইন করুন

© All rights reserved © "Daily SB NEWS"
Theme Developed BY Global Seba