আজঃ শনিবার ২৩-১১-২০২৪ ইং || খ্রিষ্টাব্দ

বগুড়ায় ডিবি হেফাজতে আইনজীবীর সহকারীর মৃত্যু ছিল স্বাভাবিক

Posted By Shuvo
  • আপডেটেড: রবিবার ২২ Oct ২০২৩
  • / পঠিত : ২০৮ বার

বগুড়ায় ডিবি হেফাজতে আইনজীবীর সহকারীর মৃত্যু ছিল স্বাভাবিক

ডেস্ক: বগুড়ায় পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) হেফাজতে মারা যাওয়া আইনজীবীর সহকারী হাবিবুর রহমানের (৩৬) ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেয়েছে পুলিশ। শনিবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগ থেকে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এতে হাবিবুরের মৃত্যুর কারণে হিসেবে হৃদযন্ত্র বন্ধ হওয়ার কথা বলা হয়েছে।

আইনজীবীর সহকারী হাবিবুরের মৃত্যুর পর গত ৪ অক্টোবর শজিমেক হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. মিজানুর রহমান মরদেহের ময়নাতদন্ত করেন।

ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে চিকিৎসক এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে হাবিবুরের হৃদযন্ত্র বন্ধ হওয়ার কারণে মৃত্যু হয়েছে। এটা প্রাকৃতিক ও স্বাভাবিক মৃত্যু। তার শরীরের অভ্যন্তরে বা বাইরে কোনো আঘাতের চিহ্ন ছিল না।

ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক ডা. মিজানুর রহামন বলেন, হাবিবুরের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। প্রতিবেদনে কোনো নির্যাতনের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। বগুড়া সদর থানা পুলিশ ও আদালতে এই প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।

হাবিবুরকে ইলেকট্রিক শক দেওয়া হয়েছিল কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এমন কোনা আলামত পাওয়া যায়নি।

বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইহান ওলিউল্লাহ ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, হাবিবুরের মৃত্যুর ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছিল। তার পরিপ্রেক্ষিতে আজ ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন এসেছে। প্রতিবেদনে স্বাভাবিক মৃত্যুর কথা বলা হয়েছে। মামলার তদন্ত প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে প্রতিবেদনের বিষয়ে আদালতকে অবগত করা হবে।

জানা যায়, গত ২ আগস্ট শাজাহানপুরের জোড়া গ্রামের খুকি বেওয়া (৮০) নিখোঁজ হন। তার দুইদিন পর ৪ আগস্ট গ্রামের পুকুর থেকে তার বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তবে সেসময় খুকির একটি পা পাওয়া যায়নি। দুই মাস পর গত ৩ অক্টোবর জোড়া গ্রামের মনোয়ারা বেওয়ার বাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে খুকির হারানো পা বস্তায় বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরে বাড়ির মালিক মনোয়ারাকে পুলিশ আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে হাবিবুরের নাম উঠে আসে।

ওইদিন বিকেলে খুকি হত্যায় সন্দেহভাজন হিসেবে ডিবি হাবিবুরকে আটক করে। তাকে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়ার পরেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এর পর পুলিশ চিকিৎসার জন্য হাবিবুরকে সরকারি মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে নিয়ে যায়। রাত ৮টা ৪৫ মিনিটে সেখানকার মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক শামিম হোসেন তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশের নির্যাতনে হাবিবুরের মৃত্যুর অভিযোগ করা হয়।

এদিকে, ৪ অক্টোবর বগুড়ার জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুমাইয়া সিদ্দিকার আদালতে আসামি মনোয়ারা জানান, খুকিকে হত্যার পর তার পা কেটে শরীর ছোট করা হয়। বস্তায় ভরে মরদেহ লুকানোর সুবিধার্থে হাবিবসহ চারজন এই কাজ করেন। হাবিবুর ২০১৩ সালের এপ্রিলে খুকি বেওয়ার সৎ ছেলে বিপুল (১৫) হত্যা মামলার ১ নম্বর আসামি।

হাবিবুর রহমান বগুড়া আদালতের আইনজীবী সহকারী সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি বগুড়া আদালতের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মঞ্জুরুল ইসলাম ওরফে মঞ্জুর সহকারী ও সম্পর্কে ভাগনে। তিনি বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার জোড়া দামোরপাড়া গ্রামের আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে।

হাবিবুরের মামা ও আইনজীবী মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন জানাই ছিল। পুলিশ আগেই সব ম্যানেজ করে রেখেছিল। হাবিবুরকে নির্যাতন করেই হত্যা করা হয়েছে।

পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগের পরও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনো সময় ফুরিয়ে যায়নি। আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

ট্যাগস :

শেয়ার নিউজ


নিউজ কমেন্ট করার জন্য প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে লগইন করুন

© All rights reserved © "Daily SB NEWS"
Theme Developed BY Global Seba