আজঃ মঙ্গলবার ১৭-০৯-২০২৪ ইং || খ্রিষ্টাব্দ

হাসপাতালের মেঝেতে যুবদল নেতার ডান্ডাবেড়ি লাগানো ছবি ভাইরাল

Posted By Shuvo
  • আপডেটেড: বুধবার ২৯ Nov ২০২৩
  • / পঠিত : ২০৫ বার

হাসপাতালের মেঝেতে যুবদল নেতার ডান্ডাবেড়ি লাগানো ছবি ভাইরাল

ডেস্ক : হাসপাতালের মেঝেতে গুরুতর অসুস্থ হয়ে কাতরাচ্ছেন যুবদল নেতা। অসুস্থ অবস্থায় দুটো পা ভাঁজ করে শুয়ে আছে। পায়ে তার ডান্ডাবেড়ি। দুই পায়ে ডান্ডাবেড়ি থাকাতে দুই পা সোজাও করতে পারছেন না। এছাড়া এক হাতে ঝুলছে হাতকড়া। অন্যহাতে ইনজেকশনের ক্যানোলা। দুই পায়ের মাঝখানে পড়ে আছে ‘ক্যাথেটার’। এমনই একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

অসুস্থ এই যুবদল নেতার নাম আমিনুর রহমান মধু। তিনি যশোর জেলা যুবদলের সহসভাপতি। এছাড়া তিনি সদর উপজেলার আমদাবাদ ডিগ্রি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এবং বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সাহিত্য ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক।

দলীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত ২ নভেম্বর সদর উপজেলার আমদাবাদ এলাকা বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় পুলিশ আমিনুরকে গ্রেপ্তার করে। এরপর ১২ নভেম্বর যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে থাকা অবস্থায় আমিনুর রহমান মধু হৃদরোগে আক্রান্ত হন। কারাগার থেকে তার দুই পায়ে ডান্ডাবেড়ি হাতকড়া লাগিয়ে প্রথমে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখান থেকে অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ওই রাতেই তাকে ঢাকার কেরানীগঞ্জ কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। পরদিন ১৩ নভেম্বর কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে তাকে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। দুই পায়ে ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে ও ডান হাতে হাতকড়া লাগানো অস্থায় হাসপাতালের মেঝেতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয় তাকে। একই হাতে একগুচ্ছ দড়ি পেঁচানো ছিল। তার শরীরে ডান্ডাবেড়ি এবং হাতকড়া এমনভাবে লাগানো যাতে সামান্য নড়েচড়ে বসারও কোনো সুযোগ নেই। কেবলমাত্র দুই হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকা ছাড়া। চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় পুলিশের আপত্তির মুখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে বিছানা পর্যন্ত দেয়নি। যে কারণে আমিনুর রহমান মধুকে মেঝেতে রেখে চিকিৎসা করা হয়। তার বাম হাতে ক্যানোলা লাগানো। সেখানে স্বজনদের কাছে যেতে দেয়নি পুলিশ। এমনকি সময়মতো তাকে ওষুধ সেবন পর্যন্ত করতে দেওয়া হয়নি।

আমিনুরের স্ত্রী নাহিদা সুলতানা লাবনী বলেন, পরিবারের অভিভাবক গুরুতর অসুস্থ হয়ে জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। আমি আমার দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে চরম উদ্বিগ্ন। এমতাবস্থায় তার প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পর্যন্ত দেওয়া হচ্ছে না। তার ওপর কত অমানবিকভাবে দুই পায়ে ডান্ডাবেড়ি ও হাতে হাতকড়া পরিয়ে রেখেছে।

তিনি জানান, বুধবার (২৯ নভেম্বর) হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে এনজিওগ্রাম করার কথা বলেছিল। এজন্যে তাকে মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি রাখতে বলেছে। কিন্তু তার আগেই কারা কর্তৃপক্ষ তাকে জোর করে হাসপাতাল থেকে কারাগারে নিয়ে গেছে।

বিএনপির খুলনা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, বর্তমান সরকারের হাতে আইনের শাসন ও মানবাধিকার কতটুকু পর্যুদস্ত হতে পারে, আমিনুর রহমান মধুকে জামিন না দেওয়া ও চিকিৎসার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করার ঘটনা তার জলজ্যান্ত প্রমাণ। এভাবে এখন জরুরি রোগীকে চিকিৎসা দেওয়াতে তার জীবনের জন্য ঝুঁকি।

যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, বিষয়টা খুবই অমানবিক। একজন হৃদরোগের রোগীকে এভাবে ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে রেখে চিকিৎসা দেওয়া মোটেও সমীচীন নয়। আইন আদালত-মানুষের কল্যাণের জন্য, অকল্যাণের জন্যে নয়।

যশোর কলেজ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ইবাদত খান বলেন, বাংলাদেশে আইন কাগজ-কলমে আছে, বাস্তবে নেই। আমিনুর রহমান মধু যে রোগে অসুস্থ তাতে যেকোনো সময় একটা দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। তার ওপর একজন শিক্ষককে এমন পরিস্থিতির মধ্যে ফেলে রাখা দেশ ও জাতির জন্যে খুবই লজ্জাজনক। তার স্ত্রী-সন্তান অত্যন্ত মানবেতর জীবনযাপন করছে। তাই আমি আশা করবো আদালত তাকে জামিন দিয়ে সুচিকিৎসার সুযোগ করে দেবে।

ট্যাগস :

শেয়ার নিউজ


নিউজ কমেন্ট করার জন্য প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে লগইন করুন

© All rights reserved © "Daily SB NEWS"
Theme Developed BY Global Seba