আজঃ মঙ্গলবার ২৪-০৯-২০২৪ ইং || খ্রিষ্টাব্দ

টাইম আউটে’ আটকে গেল ৪ পরীক্ষার্থীর শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন

Posted By Shuvo
  • আপডেটেড: রবিবার ১০ Dec ২০২৩
  • / পঠিত : ১৭৪ বার

টাইম আউটে’ আটকে গেল ৪ পরীক্ষার্থীর শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন

: পরীক্ষা শুরু সকাল ১০টায়। কিন্তু সড়কে পরীক্ষাকালীন যানজটের কারণে কেন্দ্রে উপস্থিত হতে সময় লাগে ৯ মিনিট ৪০ সেকেন্ড। মাত্র ১০ মিনিটের এই সময়ের বিলম্বে চলতি বছর সহকারী শিক্ষক নিয়োগের লিখিত (এমসিকিউ) পরীক্ষা দিতে পারলেন না ভোলার ৪ পরীক্ষার্থী। দেরি করে হলে প্রবেশ করলেও দায়িত্বরত পরীক্ষা কমিটির শিক্ষকদের আপত্তিতে তাদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া হয়। এতে ওই পরীক্ষার্থীরা কেন্দ্রের বাইরে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন। 

এ বছরই বয়সের কারণে অনেকরই শেষবারের মতো সহকারী শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় অংশ নেয়ার কথা ছিল। তবে এমন ঘটনা যেন ক্রিকেটের ‘টাইম আউট’ এর মতো, অনেকটা পরীক্ষার হল থেকেই আউট হয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা। এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন ভোলা জেলা প্রশাসক আরিফুজ্জামান।

ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার নজরুলনগর ইউনিয়ন থেকে সকাল সাড়ে ৬টায় বাসে রওয়ানা দেন নাজনিন নাহার ঝুমু। লক্ষ্য ছিল সহকারী শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় অংশ নিয়ে চাকরি পেয়ে নিজের স্বপ্ন পূরণের। কিন্তু সেই স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে গেল। পরীক্ষাকালীন সময়ে শহরে হঠাৎ যানজটের কারণে ভোলার সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষা কেন্দ্রে উপস্থিত হতে সময় লাগে ৯.৪০ মিনিট। পরে পরীক্ষা দেয়ার জন্য প্রবেশ করতে যান হলে। কিন্তু হলে প্রবেশ করার আগেই পরীক্ষা কেন্দ্রর দায়িত্বে থাকা শিক্ষক ও কর্মকর্তারা ১০ মিনিট দেরিতে আসায় তাকে বের করে দেন। এরপর নাজনিনের আর পরীক্ষা দেয়া হয়নি।

শুধু নাজনিন নয় একই সময় বোরহানউদ্দিনের হাবিবা, জেরিন ও দৌলতখান থেকে পরীক্ষা দিতে আসা লিপি আক্তারকেও পরীক্ষা দিতে হলে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। এমন ঘটনার পর সবাই পরীক্ষা কেন্দ্রের বাইরে এসে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। এদের কেউ কেউ এবারই শেষবারের মতো প্রাইমারি পরীক্ষায় অংশ নিতে এসেছিল। কিন্তু ১০ মিনিটের আক্ষেপ আজীবন থেকে যাবে তাদের।

পরীক্ষা কেন্দ্রের বাইরে থাকা অভিভাবক আফজাল হোসেন বলেন, মানবিক কারণে দেরি করে আসা শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার হলে বসতে দেয়া উচিত ছিল। কারণ, গ্রামের মেয়েদের এমনিতেই অভিভাবকেরা পড়াশোনা করাতে চায় না, অল্প বয়সে বিয়ে দিয়ে দেয়। এখন সেখানে যদি মেয়েরা প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিয়ে একটি চাকরি পায়, সেক্ষেত্রে অন্য মেয়েদের বাল্যবিয়ে থেকে বেঁচে যাওয়া কিংবা স্বামীর বাড়িতে সম্মান কিছুটা বৃদ্ধি পায়। আজকে এই মেয়েদের সঙ্গে যেটা ঘটলো, সেটা অমানবিক। হলের দায়িত্বরত স্যারদেরও বোন কিংবা মেয়েদের সঙ্গে যদি এমনটা ঘটতো তাহলে তারা কি করতো?

ভোলা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও পরীক্ষা কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা সফিকুল ইসলাম জানান, চারজন নাকি দুজন, না একজন- তা আমাদের দেখার বিষয় না। আমাদের সরকারি নির্দেশনা আছে পরীক্ষা শুরুর ১ ঘণ্টা আগে আসন গ্রহণ করতে হবে এবং সকাল সাড়ে নয়টার পরে ম্যাজিস্ট্রেট ছাড়া কেউ পরীক্ষার কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবে না, বের হতে পারবে না। সুতরাং, কেউ পরীক্ষা দিতে আসছে পরে তাকে বের করে দেয়া হয়েছে- এমন কোনো তথ্য নেই বলেও দাবি করেন তিনি।

এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন ভোলা জেলা প্রশাসক আরিফুজ্জামান। তিনি বলেন, মানবিক দিক বিবেচনা করে ২০ মিনিট দেরি করে এলেও শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় বসার অনুমতি দেয়া উচিত ছিল। আমাকে যদি আগে বিষয়টি জানানো হতো, তাহলে কোনোকিছু করা যেত। যেহেতু আমাকে পরে জানানো হয়েছে, সেহেতু এখন আর দুঃখ প্রকাশ করা ছাড়া কিছু করার নেই।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, ভোলা জেলার সাতটি উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে ৩৫০টি শূন্য পদের বিপরীতে প্রায় ১৬ হাজার চাকরি প্রত্যাশী ৩০টি কেন্দ্রে লিখিত (এমসিকিউ) পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন।

ট্যাগস :

শেয়ার নিউজ


নিউজ কমেন্ট করার জন্য প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে লগইন করুন

© All rights reserved © "Daily SB NEWS"
Theme Developed BY Global Seba