আজঃ বুধবার ২৭-১১-২০২৪ ইং || খ্রিষ্টাব্দ

ফেসবুকে রোহিঙ্গাবিদ্বেষ ছড়ানোর নেপথ্যে ছিল সামরিক বাহিনী: জাতিসংঘ

Posted By Shuvo
  • আপডেটেড: শনিবার ৩০ Mar ২০২৪
  • / পঠিত : ৮৫ বার

ফেসবুকে রোহিঙ্গাবিদ্বেষ ছড়ানোর নেপথ্যে ছিল সামরিক বাহিনী: জাতিসংঘ

: ২০১৭ সালে মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন প্রদেশে সেনা অভিযান শুরুর আগে ফেসবুকে বিভিন্ন পেজ খুলে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বিরতিহীনভাবে যেসব ঘৃণা ও উসকানিমূলক বক্তব্য, পোস্ট ছড়ানো হয়েছিল, সেসবের পেছনে সরাসরি ইন্ধন ছিল দেশটির সামরিক বাহিনীর। 

জাতিসংঘ বলছে, রোহিঙ্গাবিদ্বেষ ছড়ানোর নেপথ্যে ছিল দেশটির সামরিক বাহিনী। সম্প্রতি জাতিসংঘের এক তদন্তে বিষয়টি উঠে এসেছে।

মিয়ানমারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ইরাবতি বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। সংবাদমাধ্যমটি বলছে, দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানোর কাজে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে। 

জাতিসংঘের এক তদন্তে জানা গেছে, হাজারো রোহিঙ্গাকে নির্যাতন করে বাংলাদেশে পালিয়ে যেতে বাধ্য করার আগে বড় আকারে ফেসবুকে এই জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানো হয়।

২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনে কয়েকটি সেনা ছাউনি ও পুলিশ স্টেশনে বোমা হামলা এবং রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান স্যালভেশন আর্মি (আরসা) সেই হামলার দায় স্বীকারের পর রাখাইনে অভিযান শুরু করে মিয়ানমারের সেনা বাহিনী। 

অভিযানে সেনা সদস্যদের হাতে সংঘটিত হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের মুখে টিকতে না পেরে রাখাইন থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন অন্তত ১০ লাখ রোহিঙ্গা, এখনও তাদের ফেরত নেয়নি মিয়ানমার।

তবে আরসার বোমা হামলারও বেশ আগে থেকে মিয়ানমারে ফেসবুকের শত শত পেজে নিয়মিত ছড়ানো হচ্ছিল রোহিঙ্গাদের প্রতি বিদ্বেষপূর্ণ বিভিন্ন বক্তব্য, ছবি এবং পোস্ট। 

২০১৭ সালের অভিযানের তদন্তে গঠিত জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা ইউএন হিউম্যান রাইটস কাউন্সিলে ২০১৮ সালে ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইনভেস্টিগেটিভ মেকানিজম অব মিয়ানমার (আইআইএমএম) নামে একটি শাখা সংস্থা খোলে। বুধবার মানবাধিকার কাউন্সিলে একটি তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছে আইআইএমএম। 

সেই প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ২০১৭ সালে ছড়ানো এসব ঘৃণা ও উসকানিমূলক বক্তব্য ও পোস্ট ছিল আসলে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে আসন্ন অভিযানের প্রচারণা এবং এই পুরো প্রচারণা প্রকল্প আড়াল থেকে তত্ত্বাবধান করেছে মিয়ানমারের সেনা বাহিনী।

২০২১ সালের শেষের দিকে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা ফেসবুকের বিরুদ্ধে ১৫ হাজার কোটি ডলারের মামলা করে। তাদের অভিযোগ ছিল, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক তাদের বিরুদ্ধে পরিচালিত ঘৃণা ছড়ানো ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে। 

এখন জাতিসংঘের তদন্তকারী সংস্থা মিয়ানমারের জন্য নিবেদিত স্বাধীন তদন্ত সংস্থা (আইএমএম) বলেছে, তাদের হাতে সুস্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে যে, ফেসবুকে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানোর নেপথ্যে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী দায়ী।

মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর তত্ত্বাবধানে তৈরি মোট ৪৩টি ফেসবুক পেজ শনাক্ত করেছে আইআইএমএম। এসব পেজে ২০১৭ সালের জুন থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত আপলোড করা হয়েছিল মোট ১০ হাজার ৪৮৫টি ঘৃণা ও উসকানিমূলক পোস্ট, যেগুলো পরে মুছে দেওয়া হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমার সামরিক বাহিনী ‘পরিকল্পিত ও সমন্বিত’ পদ্ধতিতে ‘রোহিঙ্গা সংখ্যালঘুদেরকে নিয়ে ভয় ও ঘৃণা ছড়িয়েছে। সামরিক বাহিনী এই লক্ষ্য অর্জনে একটি গোপন নেটওয়ার্ক তৈরি করে যা লাখ লাখ মানুষের কাছে তাদের বার্তা পৌঁছে যায়।

ট্যাগস :

শেয়ার নিউজ


নিউজ কমেন্ট করার জন্য প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে লগইন করুন

© All rights reserved © "Daily SB NEWS"
Theme Developed BY Global Seba