আজঃ বৃহস্পতিবার ১৯-০৯-২০২৪ ইং || খ্রিষ্টাব্দ

হত্যা মামলায় আসামির মৃত্যুদণ্ড, বাদীর ৫ বছরের কারাদণ্ড

Posted By Shuvo
  • আপডেটেড: বৃহস্পতিবার ০১ জুন ২০২৩
  • / পঠিত : ১৮২ বার

হত্যা মামলায় আসামির মৃত্যুদণ্ড, বাদীর ৫ বছরের কারাদণ্ড

জয়পুরহাটে এক ব্যক্তিকে শ্বাসরোধ করে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় এক আসামির মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। তার ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। একই সঙ্গে তথ্য গোপন করে আদালতে মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়ায় ওই মামলার বাদী নিহতের স্ত্রীকে পাঁচ বছর সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালতের বিচারক। এছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এ মামলার অন্য পাঁচ জন আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে। 

বুধবার (৩১ মে) দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আব্বাস উদ্দীন এ রায় দেন।  জয়পুরহাট আদালতের পুলিশ পরির্দশক আব্দুল লতিফ খান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, রায় ঘোষণার সময় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ মামলার বাদীকেও কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বাদী পলাতক আছেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন- শাহীন (৫২)। তিনি ক্ষেতলাল উপজেলার মহব্বতপুর গ্রামের মনির উদ্দিনের ছেলে। কারাদণ্ডপ্রাপ্ত মামলার বাদী হলেন- আঞ্জুয়ারা (৪৫)। তিনি একই গ্রামের নিহত আলম খাঁনের স্ত্রী। একই সঙ্গে তার ১০ হাজার টাকা জরিমানা, তা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

মামলার বিবরণ ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, ক্ষেতলাল উপজেলার মহব্বতপুর গ্রামে নিহত আলম খাঁন ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি শাহিনের বাড়ি। তারা একে অপরের প্রতিবেশী। সাংসারিক প্রয়োজনে শাহিন তার প্রতিবেশী আলমের কাছ থেকে সাত হাজার টাকা হওলাত নিয়েছিলেন। শাহিন টাকা ফেরত দিচ্ছিলেন না। এনিয়ে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এঘটনায় আলম ২০০৬ সালের ১৭ মে ক্ষেতলাল থানায় শাহিনের বিরুদ্ধে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন। এতে শাহিন ক্ষুব্ধ হয়ে  ২০০৬ সালের ২০ মে রাত ৮টার দিকে হাওলাতি টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলে তার দলবল নিয়ে আলমের বাড়িতে যান। সেখান থেকে আলমকে তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে যান এবং শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। এতে আলম অসুস্থ হলে তাকে বাড়ির বাইরে এনে বাঁশের মাচার উপর ফেলে রেখে যান। 

আলমের স্ত্রী শাহিনের বাড়িতে এসে দেখেন, লোকজন তার স্বামীর মাথায় পানি দিচ্ছেন। তারা আলমকে সেখান থেকে জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালে ভর্তি নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসকেরা জানান তিনি মারা গেছে।

এ ঘটনায় জয়পুরহাট থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়। এ কারণে আলমের স্ত্রীর হত্যা মামলা নেয়নি থানা পুলিশ। আলম খানের মৃত্যুর সঠিক কারণ নিরুপনে রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য ঢাকাতে পাঠানো হয়। ওই বছরের ৩১ অক্টোবর রাসায়নিক পরীক্ষার প্রতিবেদন জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে আসে। আলমকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করা হয় বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

এরপর ২০০৬ সালের ২৬ নভেম্বর নিহত আলমের স্ত্রী আঞ্জুয়ারা বাদী হয়ে ছয় জনের বিরুদ্ধে ক্ষেতলাল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ২০০৭ সালে আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।  এরমধ্য মামলার বাদী আসামিপক্ষের সঙ্গে টাকার বিনিময়ে আপস করেন। ফলে বাদী আদালতে তথ্য গোপন করে মিথ্যা স্বাক্ষী দেন।

দীর্ঘ শুনানি শেষে বুধবার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আব্বাস উদ্দীন এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। রাষ্ট্রপক্ষের অ্যাডভোকেট নৃপেন্দ্রনাথ মন্ডল পিপি মামলাটি পরিচালনা করেন। আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান, অ্যাডভোকেট পবন কুমার আগারওয়ালা ও অ্যাডভোকেট আহসান হাবিব সরকার।

ট্যাগস :

শেয়ার নিউজ


নিউজ কমেন্ট করার জন্য প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে লগইন করুন

© All rights reserved © "Daily SB NEWS"
Theme Developed BY Global Seba