আজঃ শনিবার ২৩-১১-২০২৪ ইং || খ্রিষ্টাব্দ

মাদারীপুরে ১৪ সরকারি দপ্তরের ৫ কোটি টাকার বেশি বিদ্যুৎ বিল বকেয়া

Posted By Shuvo
  • আপডেটেড: রবিবার ২৫ জুন ২০২৩
  • / পঠিত : ২০৯ বার

মাদারীপুরে ১৪ সরকারি দপ্তরের ৫ কোটি টাকার বেশি বিদ্যুৎ বিল বকেয়া

মাদারীপুরে বেশ কয়েকটি সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কোটি কোটি টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে। এদিকে বকেয়া থাকলেও তা আদায় করতে ব্যর্থ হচ্ছে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো)। শুধুমাত্র চিঠি দিয়ে বিদ্যুৎ বিভাগ দায় এড়ানোর চেষ্টা করছে। আর এসব নিয়ে ক্ষুব্ধ স্থানীয় জনতা ও সচেতন মহল এবং নাগরিক সমাজ। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দাবি বরাদ্দ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে করা হবে বিল পরিশোধ। বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তাদের দাবি পাওনা আদায়ে কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

জানা যায়, মাদারীপুরে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের অধীনে ৫ কোটি ২২ লাখ টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া পড়ে আছে। এর মধ্যে প্রথম তালিকায় রয়েছে মাদারীপুর পৌরসভা। যার বকেয়া বিলের পরিমাণ ৪ কোটি ৬ লাখ ৫২ হাজার ৮৮৬ টাকা। এর মধ্যে দ্বিতীয় তালিকায় রয়েছে মাদারীপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়। যার বকেয়া বিদ্যুৎ বিলের পরিমাণ  ৩৯ লাখ ৩৮ হাজার ৯০৪ টাকা। 

এদিকে তৃতীয় স্থানে রয়েছে সিভিল সার্জনের কার্যালয়, সেখানে বছরে বকেয়ার পরিমাণ ২০ লাখ ১২ হাজার ৭১৯ টাকা। এছাড়া এই তালিকায় গণপূর্ত অধিদপ্তর। যার বকেয়া বিদ্যুৎ বিলের পরিমাণ ১৮ লাখ ৩০ হাজার ১১১ টাকা। জেলা প্রশাসনের বকেয়া বিদ্যুৎ বিলের পরিমাণ ২ লাখ ৮৯ হাজার ৬৯৫ টাকা। ফায়ার সার্ভিসের বকেয়া বিদ্যুৎ বিলের পরিমাণ ১ লাখ ৩৮ হাজার ২১৮ টাকা, জেলা কারাগারের বকেয়া বিদ্যুৎ বিলের পরিমাণ ১ লাখ ৭৫ হাজার ৭০০ টাকা, সড়ক ও জনপদ বিভাগের বকেয়া বিদ্যুৎ বিলের পরিমাণ ৭ লাখ ৪৬ হাজার ৫১১ টাকা, শিল্পকলা একাডেমির বকেয়া বিদ্যুৎ বিলের পরিমাণ ৩ লাখ ২৪ হাজার ৩৪৪ টাকা, কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের বকেয়া বিদ্যুৎ বিলের পরিমাণ ৩ লাখ ২৪ হাজার ৩৪৪ টাকা, ডনোভান সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের বকেয়া বিদ্যুৎ বিলের পরিমাণ ২ লাখ ৮৩ হাজার ৮৪৯ টাকা, সমাজকল্যাণ দপ্তরের বকেয়া বিদ্যুৎ বিলের পরিমাণ ২ লাখ ১৮ হাজার ২৭২ টাকা, থানা প্রাইমারী শিক্ষা অফিসের বকেয়া বিদ্যুৎ বিলের পরিমাণ ৫১ হাজার ৯১৬ টাকা। মোট ১৪টি প্রতিষ্ঠানের নাম রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষুব্ধ সচেতন নাগরিক সমাজ।

সচেতন নাগরিক কমিটির মাদারীপুরের সদস্য খান মোহাম্মদ শহীদ বলেন, দুইমাসের বিদ্যুৎবিল বকেয়া থাকলে কোনো ধরনের নোটিশ ছাড়াই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার বিধান রয়েছে। অথচ এসব প্রতিষ্ঠানে লাখ লাখ টাকা বিদ্যুৎবিল থাকলেও শুধুমাত্র চিঠিতেই সীমাবদ্ধ বিদ্যুৎবিভাগ। এটা কোনো নিয়ম হতে পারে না। সাধারণ গ্রাহকের ক্ষেত্রে দুই মাসের বিল বকেয়া থাকলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে কর্মকর্তারা চলে আসে, কিন্তু সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে লাখ লাখ টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া। তাদের বিরুদ্ধে জোরালো পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।

মাদারীপুর ডনোভান সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাফিজা বাশার পপি বলেন, বারো মাসের বিদ্যুৎ বিল একসঙ্গে প্রদান করা হয়। এটি জুন মাসের শেষের মধ্যে দেওয়া হয়। এই অর্থবছরেও পাওনা সব বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করা হবে।

মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মাসুদ আলম খান জানান, বরাদ্দ আসতে দেরি হওয়ায় বিল বকেয়া হয়েছিল। এরই মধ্যে বড় একটি অংশ পরিশোধের জন্য চেক প্রদান করা হয়েছে। এই চেকের অর্থ বিদ্যুৎ বিভাগ শিগগিরই তাদের অ্যাকাউন্টে পেয়ে যাবে। এছাড়া অল্পকিছু বিল বকেয়া থাকলেও চলতি অর্থবছরে পর্যায়ক্রমে পরিশোধ করা হবে।

মাদারীপুরের সিভিল সার্জন ডা. মুনীর আহম্মদ খান বলেন, বিদ্যুৎ বিলের অর্থ প্রদানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে আংশিক বিল প্রদান করা হয়েছে। সরকারি এক দপ্তরের অর্থ, আরেক দপ্তর নেবে, এতে একটু বিলম্ব হলেও কোনো সমস্যা হবার কথা নয়।

ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মিজানুর রহমান জানান, দ্রুত বকেয়া বিল আদায় করতে দায়িত্ব পালন করছেন ৪ জন সহকারী প্রকৌশলী। তাদেরকে চিঠির মাধ্যমে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। চলতি অর্থবছরে পাওনা সব দপ্তরের বকেয়া বিদ্যুৎ বিল আদায় সম্ভব হবে।

ট্যাগস :

শেয়ার নিউজ


নিউজ কমেন্ট করার জন্য প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে লগইন করুন

© All rights reserved © "Daily SB NEWS"
Theme Developed BY Global Seba