আজঃ বুধবার ০৪-১২-২০২৪ ইং || খ্রিষ্টাব্দ

কিশোরগঞ্জে যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে হত্যা, স্বামীর ফাঁসি

Posted By Shuvo
  • আপডেটেড: শুক্রবার ২১ জুলাই ২০২৩
  • / পঠিত : ১৭১ বার

কিশোরগঞ্জে যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে হত্যা, স্বামীর ফাঁসি

কিশোরগঞ্জে যৌতুকের জন্য স্ত্রী রুমা আক্তার (২২) হত্যা মামলায় স্বামী খাইরুল ইসলাম (২৮) এর ফাঁসির আদেশ দেন আদালত। বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) দুপুরে কিশোরগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ এ রায় দেন। এ সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

মৃত্যু দণ্ডপ্রাপ্ত খাইরুল ইসলাম টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল উপজেলার বাইচাইল গ্রামের আ. মজিদের ছেলে। তিনি কিশোরগঞ্জ জেলা কারাগারে কারারক্ষী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। নিহত রুমা আক্তার কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদী উপজেলা মানিকখালী গ্রামের দুবাই প্রবাসী আ. মান্নানের মেয়ে।

কিশোরগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর সরকারি কৌঁসুলি (স্পেশাল পিপি) অ্যাডভোকেট এম এ আফজল এসব তথ্য  নিশ্চিত করেনি।

মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, ঘটনার দেড় বছর পূর্বে কিশোরগঞ্জ জেলা কারাগারে কর্মরত কারারক্ষী খাইরুল ইসলামের কাছে রুমা আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে স্বামী খাইরুল রুমাকে নিয়ে কিশোরগঞ্জ জেলা কারাগারের ফ্যামিলি কোয়াটারে বসবাস করে আসছিলেন। বিয়ের ৬ মাস পরে খাইরুলকে শ্বশুর বাড়ি থেকে ৩ লাখ টাকা যৌতুক হিসেবে দেওয়া হয়। কিন্তু তার পরেও খাইরুল সন্তুষ্ট ছিল না। পুনরায় মোটরসাইকেল ক্রয় করার কথা বলে ২ লাখ ৯০ হাজার টাকা যৌতুক দাবি করে। তাতে স্ত্রী রুমা আক্তার অপারগতা প্রকাশ করেন। এরপর থেকে রুমার উপর অত্যাচার নির্যাতন অব্যাহত রাখে স্বামী খাইরুল। 

২০২০ সালের ২২ ডিসেম্বর রাত্র ২টার দিকে আসামি খাইরুল ইসলাম রুমা আক্তারের নিকট আবারও ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা যৌতুক দাবি করলে রুমা সেই টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় স্বামী খাইরুল রুমাকে এলোপাতাড়ি কিলঘুষি ও লাথি মারে।

একপর্যায়ে খাইরুল যৌতুকের টাকা না পাওয়ায় রুমা আক্তারকে হত্যার উদ্দেশ্যে কৌশলে বিষ বা বিষ জাতীয় কোন কিছু খাওয়ালে রুমা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। তখন খাইরুল একই তারিখ আড়াইটার দিকে শ্বশুর বাড়িতে সংবাদ দেয় যে, রুমা আক্তার অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। পরে শ্বশুর বাড়ির লোকজন কিশোরগঞ্জের কারাগারের কোয়াটারে এসে রুমাকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। 

সেখান থেকে রুমা আক্তারকে মুমূর্ষু অবস্থায় সিএনজি চালিত অটোরিকশা যোগে বাজিতপুরের ভাগলপুর জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসা শেষে কিছুটা সুস্থ হলে ২৬ ডিসেম্বর কর্তব্যরত ডাক্তার রুমাকে ছাড়পত্র দেয়। পরে ২৯ ডিসেম্বর দুপুর দেড়টার দিকে রুমা আক্তারের অবস্থার অবনতি হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।

মামলার তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ৩১ জুলাই কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার তৎকালীন ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন আদালতে আসামি খাইরুল ইসলামের নামে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন। মামলার শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার দুপুরে বিচারক মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ এ রায় দেন।

উল্লেখ্য, ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ নিহত রুমা আক্তারের মা বাদী হয়ে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার মামলাটি দায়ের করেন। 

ট্যাগস :

শেয়ার নিউজ


নিউজ কমেন্ট করার জন্য প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে লগইন করুন

© All rights reserved © "Daily SB NEWS"
Theme Developed BY Global Seba