- প্রথম পাতা
- অপরাধ
- অর্থনীতি
- আইন আদালত
- আন্তর্জাতিক
- আবহাওয়া
- এক্সক্লুসিভ
- কৃষি
- খেলাধুলা
- জাতীয়
- জেলা সংবাদ
- ঈশ্বরদী
- কক্সবাজার
- কিশোরগঞ্জ
- কুড়িগ্রাম
- কুমিল্লা
- কুষ্টিয়া
- খাগড়াছড়ি
- খুলনা
- গাইবান্ধা
- গাজীপুর
- গোপালগঞ্জ
- চট্টগ্রাম
- চাঁদপুর
- চাঁপাইনবাবগঞ্জ
- চুয়াডাঙ্গা
- জয়পুরহাট
- জামালপুর
- ঝালকাঠি
- ঝিনাইদহ
- টাঙ্গাইল
- ঠাকুরগাঁও
- ঢাকা
- দিনাজপুর
- নওগাঁ
- নড়াইল
- নরসিংদী
- নাটোর
- নারায়ণগঞ্জ
- নীলফামারী
- নেত্রকোনা
- নোয়াখালী
- পঞ্চগড়
- পটুয়াখালী
- পাবনা
- পিরোজপুর
- ফরিদপুর
- ফেনী
- বগুড়া
- বরগুনা
- বরিশাল
- বাগেরহাট
- বান্দরবান
- ব্রাহ্মণবাড়িয়া
- ভোলা
- ময়মনসিংহ
- মাগুরা
- মাদারীপুর
- মানিকগঞ্জ
- মুন্সীগঞ্জ
- মেহেরপুর
- মৌলভীবাজার
- যশোর
- রংপুর
- রাঙ্গামাটি
- রাজবাড়ী
- রাজশাহী
- লক্ষ্মীপুর
- লালমনিরহাট
- শরীয়তপুর
- শেরপুর
- সাতক্ষীরা
- সাতক্ষীরা
- সিরাজগঞ্জ
- সিলেট
- সুনামগঞ্জ
- হবিগঞ্জ
- তথ্যপ্রযুক্তি
- ধর্ম
- নির্বাচন
- প্রবাস
- বাংলাদেশ
- বিনোদন
- ব্যবসা-বানিজ্য
- রাজনীতি
- শিক্ষা
- স্বাস্থ্য
শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, মরদেহ নিয়ে স্থানীয়দের বিক্ষোভ-মানববন্ধন
- আপডেটেড: বুধবার ০৯ Aug ২০২৩
- / পঠিত : ৪২৮ বার
ডেস্ক : কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্কুলের সিঁড়ি ঘরে সপ্তম শ্রেণির পাঁচ ছাত্রীর ধূমপানের দৃশ্য গোপনে মুঠোফোনে ধারণ করার অভিযোগ উঠেছে। ওই শিক্ষার্থীদের স্বজন ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ভিডিও ধারনের পর ওই ছাত্রীদের ডেকে ঘণ্টাব্যাপী আটকে রেখে মানসিক নির্যাতন করেন। এরপর চরম ভর্ৎসনা করে ধূমপানের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখানো হয়। এমনকি অভিভাবকদের জানানোসহ বিদ্যালয় থেকে টিসি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।
এই ঘটনার জেরে বাড়ি ফিরে ‘লজ্জা আর অপমানে’ ঘরের আড়ার সাথে গলার ওড়না পেঁচিয়ে জিনিয়া খাতুন (১৪) নামের এক ছাত্রী আত্মহত্যা করেন। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের সুলতানপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
জিনিয়া কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাড়াদি গ্রামের হঠাৎ পাড়ার দিনমজুর জিল্লুর শেখের মেয়ে এবং সুলতানপুর মাহাতাবিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী। এক ভাই এবং এক বোনের মধ্যে জিনিয়া ছিল বড়।
জিনিয়ার আত্মহত্যার ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে গোটা সুলতানপুর। বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী জিনিয়ার মরদেহ নিয়ে আজ মঙ্গলবার দুপুরে বিক্ষোভ মিছিলসহ মানববন্ধন করেছে। এ সময় সুলতানপুর মাহাতাবিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদ জিনিয়ার মরদেহ দেখার জন্য সেখানে উপস্থিত হলে বিক্ষুদ্ধ জনতা তার ওপর হামলা চালায়। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় পুলিশ তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে।
স্কুল শিক্ষার্থী জিনিয়ার আত্মহত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বর্তমানে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। ঘটনার পর থেকে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে। এ ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত শিক্ষক মশিউর রহমান লাল্টু, ওয়ালিউর রহমান ও বিদ্যালয়ের আয়া শিউলী আত্মগোপন করেছেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী জিনিয়ার সহপাঠী তিথি জানায়, সোমবার (৭ আগষ্ট) দুপুর তিনটার দিকে অনেকটা কৌতূহল ও শখের বশবর্তী হয়ে জিনিয়াসহ ৫ সহপাঠী বিদ্যালয়ের চার তলার সিঁড়ি ঘরে ধূমপান করছিল। তাদের ধূমপান করার দৃশ্য অন্য ক্লাসের কয়েকজন শিক্ষার্থী দেখে ফেলে শিক্ষক রুমে গিয়ে তাদের বিরুদ্ধে শিক্ষকদের কাছে অভিযোগ করলে বিদ্যালয়ের আয়া শিউলী সেখানে গিয়ে অফিস রুমে শিক্ষকরা তাদেরকে ডেকেছে বলে জানায়।
জিনিয়াসহ ৫ শিক্ষার্থী শিক্ষক রুমে গেলে শিক্ষক মশিউর রহমান লাল্টু ও ওয়ালিউর রহমান তাদেরকে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে চরম ভর্ৎসনা করে। এ সময় ওই দুই শিক্ষক তাদের জিজ্ঞাসাবাদেরও ভিডিও ধারণ করে এবং ভিডিও স্যোসাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখান। স্কুল ব্যাগ আটকে রেখে অভিভাবকদের বিষয়টি জানানোসহ বিদ্যালয় থেকে টিসি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। এই ঘটনার পর বাড়ি ফিরে লজ্জা আর অপমানে অভিমান করে ঘরের আড়ার সাথে গলার ওড়না পেঁচিয়ে তাদের সহপাঠী জিনিয়া খাতুন আত্মহত্যা করে।
জিনিয়ার মামা জাহিদ হাসান জানান, পাঁচ জন ছাত্রী বেলা সাড়ে তিনটার দিকে স্কুলের ছাদে ধূমপান করছিল। সেখানে তার ভাগ্নিও ছিল। তাদের সিগারেট খাওয়ার দৃশ্য বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মশিউর রহমান লাল্টু ও ওয়ালিউর রহমান গোপনে তাদের মুঠোফোনে ধারণ করেন। পরে ওই ছাত্রীদের অফিস কক্ষে ডেকে মারধর করার পর ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকিসহ টিসি দিয়ে বিদ্যালয় থেকে বের করে দেওয়া এবং অভিভাবকদের জানানোর ভয় দেখান। এ ঘটনার পর বিদ্যালয় ছুটি হলে তার ভাগ্নি বাড়িতে এসে নিজ ঘরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, শিক্ষার্থীদের ভুলকে পুঁজি করে ভিডিও ধারণ করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি ও ভয়ভীতি দেখানো মোটেই কোনো শিক্ষক সুলভ আচরণ নয়। তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও তার ভাগ্নিকে আত্মহত্যার প্ররোচনায় দায়ী শিক্ষকদের কঠোর শাস্তির দাবি জানান।
অভিযুক্ত দুই শিক্ষক মশিউর রহমান লাল্টু ও ওয়ালিউর রহমান বলেন, তারা ছাত্রীদের ধূমপানের কোন দৃশ্য মোবাইলে ভিডিও ধারণ করেননি। অন্য ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের ধূমপান করার বিষয়ে তাদের কাছে অভিযোগ করলে জিনিয়াসহ ৫ শিক্ষার্থীকে ডেকে নিয়ে এসে ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় এবং ধূমপান করার বিষয়টি অভিভাবকদের জানানোর কথা বলা হয়। এর বেশি কিছু নয়। এমন তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কোন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করতে পারে এটা তাদের ধারণার বাইরে ছিল বলে তারা দাবি করেন। তবে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার এ ঘটনায় তারা দুজনই অনুতপ্ত এবং ক্ষমা প্রার্থী বলে জানান।
ঘটনার বিষয়ে সুলতানপুর মাহতাবুদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদ বলেন, তিনি ঘটনার সময়ে বিদ্যালয়ের বাইরে ছিলেন। বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে ঘটনাটি জেনেছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখে যদি এ ঘটনার সাথে কোন শিক্ষক জড়িত থাকেন তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান।
এদিকে মঙ্গলবার বেলা ১২ টার দিকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে জিনিয়ার লাশের ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ সুলতানপুর গ্রামে এসে পৌঁছালে সেখানে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। এ সময় স্বজন ও এলাকাবাসীর আহাজারিতে আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। দুপুর দুইটার দিকে সুলতানপুর ঈদগাহ ময়দানে শত শত মানুষের অংশগ্রহণে জিনিয়ার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। পরে সুলতানপুর বড় গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। এর আগে খাটিয়ায় জিনিয়ার লাশ নিয়ে এলাকার শত শত নারী-পুরুষ সুলতানপুর বাজারে বিক্ষোভ মিছিল করে এবং প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে জিনিয়ার আত্মহত্যার প্ররোচনাকারী দুই শিক্ষকসহ জড়িতদের দৃষ্ঠান্তমূলক শাস্তির দাবি জানায়।
এ সময় সুলতানপুর মাহাতাবিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদ জিনিয়ার লাশ দেখার জন্য সেখানে উপস্থিত হলে বিক্ষুদ্ধ জনতা তাঁর ওপর হামলা চালায়। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় পুলিশ তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে।
জিনিয়ার আত্মহত্যার বিষয়ে কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকিবুল ইসলাম জানান, স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যার ঘটনার বিষয়টি তারা প্রাথমিকভাবে তদন্ত শুরু করছেন। মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত তিনি নিজেই সুলতানপুর এলাকায় ছিলেন। এ ঘটনায় জিনিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ কোন লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ গ্রহণ করা হবে। এলাকার পরিবেশ স্বাভাবিক রাখতে সেখানে পুলিশ মোতায়েন রাখার কথাও জানান তিনি।
শেয়ার নিউজ
নিউজ কমেন্ট করার জন্য প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে লগইন করুন
-
সর্বশেষ
-
পপুলার