আজঃ শনিবার ২৩-১১-২০২৪ ইং || খ্রিষ্টাব্দ

হাড়গোড়ের ডিএনএ পরীক্ষা করে মিলল নিহতের পরিচয়, গ্রেপ্তার ২

Posted By Shuvo
  • আপডেটেড: রবিবার ১৭ Sep ২০২৩
  • / পঠিত : ১৮৫ বার

হাড়গোড়ের ডিএনএ পরীক্ষা করে মিলল নিহতের পরিচয়, গ্রেপ্তার ২

ফরিদপুরের মধুখালীতে উদ্ধার হওয়া হাড়গোড়ের ডিএনএ পরীক্ষা করে নিহত এক কিশোরের পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে। পুলিশ এই হত্যার সঙ্গে জড়িত দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে। উদ্ধার করা হয়েছে হত্যায় ব্যবহৃত একটি চাপাতি।

শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর দেড়টার দিকে নিজ কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা জানান পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান।

২০২২ সালের ৩০ নভেম্বর দুপুর ১টার দিকে মধুখালী উপজেলার বিলসিংহনাথ এলাকার ছাইভাঙ্গা বিলে জনৈক কল্লোল সরকারের জমি থেকে মানবদেহের খুলি, কোমরের হাড়, হাত ও পায়ের হাড় বিচ্ছিন্ন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরে ডিএনএ টেস্ট করে গত ১৩ সেপ্টেম্ববর জানা যায় মরদেহটি পাশের রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার বালিয়াকান্দি ইউনিয়নের খর্দ্দ মেগচামী খাসকান্দি গ্রামের বাসিন্দা আকিদুল মোল্লার ছেলে আল-আমিন মোল্লার (১৭)।

পুলিশ সুপার শাহজাহান জানান, মৃতের পরিচয় শনাক্ত হওয়ার পর হত্যার সঙ্গে জড়িত খর্দ্দ মেগচামী খাসকান্দি গ্রামের বাসিন্দা আলমগীর  হোসেন ওরফে জুমাতকে (২৫) গত শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টার দিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার দেওয়া তথ্যের সূত্র ধরে শুক্রবার দিবাগত রাত ২টার দিকে খর্দ্দ মেগচামী খাসকান্দি গ্রামের বাসিন্দা মো. মনির শেখকে (২০) গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

তিনি জানান, কাসিম মোল্লা ও নিহত আল-আমিন মোল্লার বাবা আকিদুল মোল্লা খর্দ্দ মেগচামী খাসকান্দি গ্রামের বাসিন্দা। কাসিম মোল্লা সুদে টাকা খাটান। তার কাছ থেকে ১০ বছর আগে আকিদুল মোল্লা ১০ হাজার টাকা সুদে ধার নেন। সুদে-আসলে ওই টাকা এক লাখ ২০ হাজার টাকা হয়েছে বলে দাবি করেন কাসিম মোল্লা। তবে আকিদুল মোল্লা এ পর্যন্ত ৩৭ হাজার টাকা পরিশোধ করেন। কিন্তু বাকি টাকার জন্য কাসিম মোল্লা আকিদুলকে চাপ দিতে থাকেন। টাকা না পেয়ে তিনি আকিদুল কিংবা তার ছেলের ক্ষতি করে দেবেন বলে হুমকিও দেন।

আলি-আমিন বালিয়াকান্দিতে একটি মুরগির খামারে কাজ করতেন। তার সহযোগী ছিলেন আলমগীর হোসেন ও মো. মনির শেখ। এর মধ্যে ওই মুরগির খামারে চুরি হয়। এ চুরির জন্য আল-আমিনকে দোষারোপ করা হয় এবং তাকে জরিমানা করা হয়। এ অবস্থায় কসিম মোল্লা আল আমিনের দুই সহযোগী আলমগীর ও মনিরের সহায়তায় ২০২২ সালের ৬ সেপ্টেম্বর পরিকল্পিতভাবে আল-আমিনকে ছাইভাঙ্গা বিলের ওখানে নিয়ে চাপাতি দিয়ে জবাই করে হত্যা করেন। পরে তার শরীর কেটে টুকরো টুকরো করে একটি বস্তায় ভরে ছাইভাঙ্গা বিলে জনৈক কল্লোল সরকারের পানিবদ্ধ  জমিতে ফেলে দেন।

পুলিশ সুপার শাহজাহান বলেন, এটি একটি নৃশংস ঘটনা। প্রথমে এ ব্যাপারে রাজবাড়ী আদালতে মামলা হয়। তদন্ত করে রাজবাড়ী সিআইডি। তবে তারা বেশি দূর এগুতে পারেনি। এরই মধ্যে কাসিম মোল্লা মারা যান। পরে মধুখালীতে থেকে হাড়গোড় উদ্ধারের পর মধুখালী থানায় পুলিশ বাদী হয়ে হত্যা মামলা করে। সেই সূত্রে তদন্ত করে আমরা অগ্রগতি করতে পেরেছি।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) শৈলেন চাকমা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) আব্দুল্লাহ বিন কালাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. সালাউদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) তালাত মাহমুদ শাহেনশা, সহকারী পুলিশ সুপার (নগরকান্দা সার্কেল) শাকিলুজ্জামান, সহকারী পুলিশ সুপার (মধুখালী সার্কেল) মিজানুর রহমান, ফরিদপুরের ট্রাফিক পুলিশ পরিদর্শক তুহিন লস্কর, ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ জলিল, মধুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহীদুল ইসলাম নিহত আল-আমিনের বাবা আকিদুল মোল্লা, মামলার বাদী মধুখালী থানার এসআই মো. আলমগীর হোসেন, তদন্তকারী কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এসআই মোহাম্মদ হান্নান মিয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফরিদপুর গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ হান্নান মিয়া জানান, শনিবার বিকেলে এ হত্যা মামলার দুই আসামি আলমগীর ও মনির ফরিদপুরের ৫ নম্বর আমলি আদালতে জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তরুণ কুমার বসাকের কাছে হত্যার দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। পরে আদালতের নির্দেশে তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। 

ট্যাগস :

শেয়ার নিউজ


নিউজ কমেন্ট করার জন্য প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে লগইন করুন

© All rights reserved © "Daily SB NEWS"
Theme Developed BY Global Seba