যশোরে যৌতুকের জন্য গৃহবধূকে দু’দফা হামলার ঘটনায় মামলা শশুর গ্রেফতার

স্বামীর বিরুদ্ধে যৌতুকের নির্যাতনের মামলায় হাজিরা ও খোঁজ খবর নিয়ে বাড়িতে ফেরার পথে প্রকাশ্যে শহরের বাদশা ফয়সাল ইসলামী ইন্সটিটিউট এর পশ্চিম পাশে পুনরায় স্বামী শ^শুর,শাশুড়ী ও তাদের ভাড়া করা সন্ত্রাসীদের হামলায় গৃহবধূ আহত ও স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় কোতয়ালি থানায় মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ১৮ মে দুপুরে যশোর কোতয়ালি থানায় মামলাটি করেন,যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার কাউরিয়া শেখপাড়া গ্রামের মৃত খন্দকার আবু বক্কারের ছেলে খন্দকার ওবাইদুল্লা। পুলিশ মামলার এজাহার নামীয় আসামী মইনুদ্দীন মোল্লাকে গ্রেফতার করেছে। তিনি গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর থানার মিলিক সিরামপুর গ্রামের বর্তমানে যশোর সদর উপজেলার শেখহাটি দক্ষিণপাড়া (কাশেম বিশ^াসের বাড়ির ভাড়টিয়া মৃত হাশেম মোল্যার ছেলে। মামলায় আসামী করা হয়েছে,গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর থানার মিলিক সিরামপুর গ্রামের বর্তমানে যশোর সদর উপজেলার শেখহাটি দক্ষিণপাড়ার কাশেমের বাড়ির ভাড়াটিয়া মঈনুদ্দীন মোল্লা,একই এলাকার মৃত হাশেম মোল্লার ছেলে মঈনুদ্দীন মোল্লা,মঈনুদ্দীন মোল্লার স্ত্রী রোজিনা বেগম,সদর উপজেলার শেখহািিট শিক্ষাবোর্ডের সামনে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির বাড়ির ভাড়াটিয়া এ্যাড নুর হোসেনের ছেলে জাকির হোসেনসহ অজ্ঞাতনামা ৫/৭জন। পুলিশ মঈনুদ্দীনকে শুক্রবার ১৯ মে আদালতে সোপর্দ করেছে।

মামলায় বাদি উল্লেখ করেন, রাজীব মোল্লার সাথে বাদির মেয়ে সুরাইয়া খাতুন (২৫) কে সামাজিকভাবে ১লাখ টাকা দেন মোহরে গত ৫বছর পূর্বে বিয়ে দেয়। সংসার জীবনে তাদের একটি ছেলে আলিফ (৩) রয়েছে। রাজীব মোল্লা বিয়ের পর থেকে তার পিতা ও মায়ের কু-প্ররোচনায় বাদির মেয়ের কাছে যৌতুক দাবি করে খারাপ ব্যবহার করে। বাদি তার মেয়ে ও শিশু বাচ্চার ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে রাজীব মোল্লাকে বিভিন্ন সময় নগদ অনুমান ৩লাখ টাকা বাদি দেই এবং বিভিন্ন জিনিস আসবাবপত্র,খাট,পালং, টিভি,ফ্রিজসহ আরো অনুমান ৩লাখ টাকার মালামাল দেয়। রাজীব মোল্লা বিদেশ যাওয়ার জন্য পুনরায় ৩লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে বাদির মেয়েকে বাদির বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। রাজীব মোল্লা তার পিতার বর্তমান বাড়িতে আসা যাওয়া করতে থাকে। বাদির মেয়ে তার স্বামী সংসার টিকিয়ে রাখার জন্য তার শ^শুর মঈনুদ্দীনের বাড়িতে তার স্বামীর সাথে কথাবার্তা বলে স্বামীর সাথে সংসার টিকিয়ে রাখার জন্য আলাপ করলেও রাজীব মোল্লা একই ভাবে বাদির মেয়ের সাথে যৌতুকের দাবিতে মারপিট করে তার শরীরের বিভিন্নস্থানে জখম করে বাদির বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। ইহার একটি সমাধানের জন্য বাদি তার জামায় রাজীব মোল্লাকে তারবাড়িতে আমন্ত্রন করেন। জামায় শ^শুর বাড়িতে আসলে তাকে বাদির মেয়ের সাথে ভালভাবে  ঘর সংসার করার জন্য জানালে সে রাজীব মোল্লা বাদীর সাথে খারাপ ব্যবহার করে স্থান ত্যাগ করে। বাদির মেয়ে উপায়ূন্তর না দেখে ঝিকরগাছা বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালতে মামলা করার পর আসামীরা সংঘবদ্ধভাবে বাদির মেয়েকে মারপিট খুন জখম করার জন্য পরিকল্পনা করে হত্যার জন্য সুযোগ খুজতে থাকে। বাদির মেয়ে গত ১৭ মে দুপুরে যশোর সদর বিজ্ঞ আদালতে তার দায়েরকৃত মামলায় হাজিরা ও খোঁজখবর নিয়ে বাড়িতে ফেরার জন্য দুপুর সোয়া ১ টায় বাদশা ফয়সাল ইসলামী ইন্সটিটিউট এর পশ্চিম পাশে পাকা রাস্তার উপর পৌছালে মঈনুদ্দীনের হুকুমে  আসামীরা বাদির মেয়ের পথের গতিরোধ করে লোহার রড ও কাঠের লাঠি দিয়ে বাদির মেয়েকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথার উপরে ও তার বুকের উপরে আঘাত করে গুরুতর আহত করে। আসামীরা প্রকাশ্যে  লোকজনের সামনে বাদির মেয়ের পরনের পরিহিত কাপড় চোপড় টানা হেচড়া করে শ্লীলতাহানী ঘটায়। মঈনুদ্দীন বাদির মেয়ের গলায় থাকা ১ ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নেয়। বাদির মেয়েকে গলা টিপে হত্যার চেষ্টা চালিয়ে  এলোপাতাড়ীভাবে মারপিট করে। এতে বাদির মেয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়লে বাদির মেয়ের সাথে থাকা লোকজন ও আশে পাশের প্রত্যক্ষ স্বাক্ষীরা আসামীদের কবল থেকে বাদির মেয়েকে উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। বাদি তার মেয়েকে হাসপাতালে মূমূর্ষ অবস্থায় দেখতে পায়। এ ঘটনায় মামলা করার পর পুলিশ এজাহার নামীয় মঈনুদ্দীনকে গ্রেফতার করে শুক্রবার আদালতে সোপর্দ করে।