আজঃ শুক্রবার ২০-০৯-২০২৪ ইং || খ্রিষ্টাব্দ

ঈদের আগে দোকান পুড়ে নিঃস্ব তাঁরা

Posted By Shuvo
  • আপডেটেড: বুধবার ০৫ এপ্রিল ২০২৩
  • / পঠিত : ৩৪৭ বার

ঈদের আগে দোকান পুড়ে নিঃস্ব তাঁরা

পবিত্র ঈদুল ফিতর সামনে রেখে কেনাবেচার সবচেয়ে ভালো সময় এখন। ঠিক সেই সময়ে ভয়াবহ আগুনে পুড়ে গেল রাজধানীর বঙ্গবাজার কমপ্লেক্সের পোশাকের দোকান, দোকানে বিক্রির জন্য রাখা পোশাক ও নগদ টাকা।

ব্যবসায়ীদের প্রাথমিক হিসাবে, আগুনে পাঁচ হাজারের মতো দোকান পুড়েছে। ক্ষতির পরিমাণ ১ হাজার কোটি টাকার বেশি। এই আগুনে কারও মৃত্যু হয়নি। তবে আগুন নেভাতে যাওয়া ফায়ার সার্ভিসের ৮ জন কর্মীসহ অন্তত ১১ জন আহত হয়েছেন। এঁদের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের দুজন কর্মীর অবস্থা গুরুতর।

বঙ্গবাজারের পোশাকের দোকানগুলোতে গতকাল মঙ্গলবার ভোর ছয়টার কিছু পরে আগুন লাগে। খবর পেয়েই সেখানে ছুটে যান ব্যবসায়ী ও দোকানের কর্মীরা। তাঁদের কেউ কেউ ঝুঁকি নিয়ে দোকানের মালপত্র সরানোর চেষ্টা করছিলেন, কেউ কেউ কিছু করার নেই জেনে দাঁড়িয়ে কাঁদছিলেন, কেউ কেউ স্বজনদের ফোন করে বলছিলেন, ‘আমার সব শেষ, আমি নিঃস্ব’।

প্রত্যক্ষদর্শী ও ফায়ার সার্ভিসের তথ্য অনুযায়ী, আগুনের সূত্রপাত হয়েছিল বঙ্গবাজার কমপ্লেক্সের আদর্শ মার্কেট থেকে। তবে আগুনের কারণ এখনো জানা যায়নি। একটা পর্যায়ে আগুন পূর্ব দিকের পুলিশ সদর দপ্তরের ব্যারাকে লেগে যায়। পুড়ে যায় বঙ্গবাজারের উত্তর পাশের বিপণিবিতান এনেক্সকো টাওয়ারের একাংশ ও মহানগর শপিং কমপ্লেক্স। বঙ্গবাজারের পশ্চিম দিকের রাস্তা পেরিয়ে আগুন লেগে যায় বঙ্গ হোমিও কমপ্লেক্স ও বঙ্গ ইসলামিয়া মার্কেটে। তবে বঙ্গবাজারের দক্ষিণ পাশে রাস্তার ওপাশে থাকা ফায়ার সার্ভিসের সদর দপ্তর রক্ষা পায়।

সকালে আগুন লাগার খবরটি জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোনের মাধ্যমে ফায়ার সার্ভিসকে জানান এক ব্যক্তি। কিছুক্ষণের মধ্যেই ফায়ার সার্ভিস গিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা শুরু করে। কিন্তু আগুন ছড়িয়ে পড়তে থাকে। একটা সময় তা আশপাশের ভবনেও লেগে যায়। ফায়ার সার্ভিস জানায়, ঢাকা ও আশপাশের তিন জেলার ২২টি স্টেশন থেকে ৪৮টি ইউনিট এবং ৬৫০ জন সদস্য আগুন নেভাতে কাজ করেছেন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী ও নৌবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, র‍্যাব ও আনসার আগুন নেভানো ও শৃঙ্খলার কাজে নানাভাবে সহায়তা করে।

সাড়ে ছয় ঘণ্টা চেষ্টার পর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। ততক্ষণে বঙ্গবাজার কমপ্লেক্সের পুরোটাই পুড়ে গেছে। আশপাশের বিপণিবিতানগুলোর দোকানও পুড়েছে। সন্ধ্যা ছয়টার দিকে দেখা যায়, বঙ্গবাজার কমপ্লেক্সের আশপাশের ভবন ও বিপণিবিতান থেকে আধপোড়া ও রক্ষা পাওয়া মালামাল বের করছেন ব্যবসায়ীরা। রাত নয়টায় পাওয়া খবর অনুযায়ী, এনেক্সকো টাওয়ারে আগুন নেভানোর কাজ করছিলেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।

ফায়ার সার্ভিস বলছে, আগুন নিয়ন্ত্রণে দেরি হওয়ার কারণ তিনটি: ১. উৎসুক জনতার কারণে আগুন নেভানোর কাজে বিঘ্ন। ২. পানির অভাব। ৩. বাতাসের বেগ।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন বেলা একটার দিকে করা ব্রিফিংয়ে মানুষের ভিড়ের একটি ভিডিও সাংবাদিকদের দেখান। তিনি বলেন, ‘কোন জায়গা দিয়ে আমরা কাজ করব? কোথায়, কীভাবে ফায়ার সার্ভিসের লোক কাজ করবে? আমরা তো আপনাদের জন্যই জীবন দিচ্ছি।’

অবশ্য ব্যবসায়ীদের কারও কারও অভিযোগ, ফায়ার সার্ভিস নিজেদের সদর দপ্তর ও সরকারি স্থাপনার দিকে যাতে আগুন ছড়িয়ে না পড়ে, সেদিকে মনোযোগী বেশি ছিল। এ অভিযোগ তুলে ব্যবসায়ী ও দোকানকর্মীদের একটি অংশ উত্তেজিত হয়ে ফায়ার সার্ভিসের সদর দপ্তরে হামলা চালায়। অগ্নিনির্বাপণের দায়িত্বে কাজ করা ফায়ার সার্ভিসের কয়েকজন সদস্যকেও মারধর করা হয়। ফায়ার সার্ভিস বলছে, হামলাকারীরা তাদের ১১টি গাড়ি ও অভ্যর্থনাকক্ষ ভাঙচুর করে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা ব্যবসায়ীদের অভিযোগকে অমূলক উল্লেখ করে বলেছেন, হামলার ঘটনা দুঃখজনক। কারণ, ফায়ার সার্ভিস তাঁদের জন্যই কাজ করছিল।


শেয়ার নিউজ


নিউজ কমেন্ট করার জন্য প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে লগইন করুন

© All rights reserved © "Daily SB NEWS"
Theme Developed BY Global Seba